বৃটিশ রাজনীতিজ্ঞ (রাজনৈতিক নেতা) জর্জ গ্যালোওয়ে বলেছেন: "২০২০ সাল থেকে (এ পর্যন্ত) ২০টি জ্বালানি শক্তি কোম্পানি ৫১৪ বিলিয়ন পাউন্ড লাভ ও মুনাফা অর্জন করেছে (জ্বালানি খাত থেকে) এবং এ বিপুল পরিমাণ লাভ ও মুনাফার কারণে তারা (উক্ত ২০টি জ্বালানি কোম্পানি) ব্রিটেনে মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র তৈরি করছে; আর জ্বালানি দারিদ্রের কারণে প্রতি বছর যুরায় (যুক্তরাজ্য) ১২৮০০০ জন নাগরিকের মৃত্যু হচ্ছে!!!!!!!"
সূত্র:
X • georgegalloway
80+ likes • 2 days ago
George Galloway
Since 2020 top 20 energy companies made £514bn operating profit, causing inflation/poverty. 128,000 people a year die in fuel poverty. No ...
************
এই খবর ও প্রতিবেদন সংক্রান্ত কিছু কথা:
প্রতি বছর জ্বালানি দারিদ্রের কারণে মৃত্যু বরণকারী এই ১২৮০০০ হতভাগা যুরা (যুক্তরাজ্য)বাসীর ১১০,০০০ জন হচ্ছে অবসরভাতা (পেনশন) গ্রহণকারী অর্থাৎ অবসর প্রাপ্ত বয়স্ক ও বৃদ্ধ। উল্লেখ্য যে এই ১২৮০০০ মৃত্যু বরণকারীর বেতন বা অবসর ভাতা তাদের জ্বালানি দারিদ্র ঘুচানোর জন্য অপর্যাপ্ত ও অপ্রতুল।তার মানে এই সাধারণ ব্রিটিশ জনগণের এক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অংশের আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই বরং তারা দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত এবং এদের এক বিরাট অংশ অবশ্যই দারিদ্র সীমার নীচে রয়েছে। আর তা না হলে কেন প্রতি বছর যুরায় (যুক্তরাজ্য) এত মানুষ (১২৮০০০জন) শীত কালে ঠাণ্ডায় জমে মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে? এটাই দারিদ্রে জর্জরিত ও দারিদ্র সীমার নীচে বহু ব্রিটিশ নাগরিকের থাকার প্রমাণ। অথচ যুরা (ব্রিটেন/যুক্তরাজ্য) বিশ্বের ৫ম বা ৬ষ্ঠ অর্থনৈতিক পরাশক্তি ও ধনী দেশ।আর যুরা অর্থাৎ যুক্তরাজ্য বা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে এক সময় সূর্য অস্তই যেত না এবং বিশ্বব্যাপী কয়েক শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শোষণ চালিয়ে এবং অধীনস্থ জাতি ও দেশসমূহের প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ সমূহ লুটপাট করেছে।অর্থ ও সম্পদের পর্বত বানিয়েও যুরার (যুক্তরাজ্য) শেষ রক্ষা হচ্ছে না।
লন্ডন নিবাসী এক ব্যক্তি সম্প্রতি টুইটারে লিখেছেন যে তিনি লন্ডনে এমন বহু পরিবার সম্পর্কে জানেন যে তাদের বাচ্চাদের জন্য খাদ্য ও জ্বালানির (বিশেষ করে শীত কালে ঘর গরম ও উষ্ণ রাখা) মধ্য থেকে যে কোনো একটি তাদের বেছে নিতে হচ্ছে !!!!!!! আবার সম্প্রতি ট্রাম্প জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণে বলেছে যে দারিদ্রের কারণে প্রতি বছর ইউরোপে বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে বাসস্থান ও ঘরবাড়ি শীতলী করণের ব্যবস্থা করতে না পারার জন্য ১৭৫,০০০ ব্যক্তির মৃত্যু হচ্ছে !!!!
এটা কেমন কথা? জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকপাল ও পথিকৃৎ এবং বিশ্বের ৫ম বা ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি বা অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুরা (যুক্তরাজ্য) কি আসলে জ্বরাগ্রস্ত দেশে পরিণত হয়েছে? যুরাকে (যুক্তরাজ্য) ওয়েলফেয়ারের (জনকল্যাণমূলক) সমাজ,দেশ ও রাষ্ট্র বলা হয় এবং এ জন্য দেশটি বিখ্যাত।অথচ বিশ্বের শিল্প ও প্রযুক্তিতে সর্বোন্নত ও সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম বা ষষ্ঠ স্থানের অধিকারী ও অবস্থানকারী দেশটিতে কেন জ্বালানি দারিদ্রের কারণে বছরে ১২৮০০০ জন মানুষ মারা যাচ্ছে?!!! অতএব এ কেমন জনকল্যাণ মূলক সমাজ,দেশ ও রাষ্ট্র হল যুরা (জ্বরাগ্রস্ত ধ্বজভঙ্গ যুক্তরাজ্য)?!!!
এ কেমন সম্পদের বন্টন?!!
আসলে জ্বরাগ্রস্ত যুরায় (যুক্তরাজ্য) চরম অর্থনৈতিক শ্রেণী বৈষম্য এবং অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ও সম্পদের বিলি-বন্টনের ভয়াল দশা ও চিত্র জ্বালানি দারিদ্রে ১২৮০০০ ব্রিটিশ নাগরিকের এই মৃত্যু সংখ্যা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় ও ফুটে ওঠে। আর মুরাদ (যুক্তরাজ্য) ওয়েলফেয়ারের দেশ না ছাই।অবসরপ্রাপ্ত পেনশন হোল্ডার বৃদ্ধবৃদ্ধাদের বাঁচিয়ে রেখে লাভ কী? যুরা (যুক্তরাজ্য) সরকার বিশ্বাস করে যে এ সব বুড়া-বুড়ী কর্মক্ষম নয় অর্থাৎ অনুৎপাদনশীল (nonproductive)। এরা বেঁচে থাকলে শুধু শুধু প্রচুর অর্থ ও সম্পদ ব্যয় করতে হবে এদের ভরণপোষণ,খাওয়া দাওয়া, বাসস্থান ও চিকিৎসা ইত্যাদির জন্য। তাই জ্বালানি খরচ অনেক বাড়িয়ে দিয়ে শোবার ও থাকার ঘর গরম করতে অক্ষম হয়ে প্রতি বছরে ওয়েলফেয়ার,গণতন্ত্র,লিবারেলিজম,মানবাধিকার,স্বাধীনতা,মানব উন্নয়ন,উন্নতি ও প্রগতির স্বর্গরাজ্য স্বপ্নপুরী ধনাঢ্য যুরায় (যুক্তরাজ্য) ১১০০০০ পেনশন প্রাপ্ত বয়স্ক বৃদ্ধ-বৃদ্ধার প্রাণহানি হচ্ছে।স্মর্তব্য যে, জ্বালানি দারিদ্রে প্রতি বছর যুরায় অর্থাৎ যুক্তরাজ্য বা ব্রিটেনে ১২৮০০০ প্রাণ হারাচ্ছে।আর এ থেকেও ভালো ভাবে স্পষ্ট ফুটে ওঠে সাধের স্বর্গরাজ্য ও স্বপ্নপুরী যুরা বা ব্রিটেনের জরাগ্রস্ত ও ধ্বজভঙ্গ অবস্থা।এখন যদি ইরানের বিরুদ্ধে মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র),যুরা (যুক্তরাজ্য),ফাজুরা (ফ্রান্স),গাজুরা (জার্মানি/গের্মানিয়া) ও ইসরাইল সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে তাহলে পশ্চিম এশিয়ার (মধ্যপ্রাচ্যের) তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র ও শিল্প সমূহ সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল ও গ্যাসের তীব্র মারাত্মক সংকট দেখা দেবে এবং জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বর্তমানের চেয়ে আরো কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। তখন যুরায় (যুক্তরাজ্য) কেমন অবস্থা দাঁড়াবে?এ যুদ্ধের আগেই যদি বছরে ১২৮০০০ জন ব্রিটিশ নাগরিক জ্বালানি দারিদ্রের কারণে পটল তুলতে চিরতরে পরপারে চলে যায় তখন বিশ্বব্যাপী উদ্ভূত তীব্র জ্বালানি সংকট ও উচ্চ মূল্য বৃদ্ধির কারণে পটল তুলতে যাওয়া ব্রিটিশদের সংখ্যা নি:সন্দেহে ১২৮০০০ জনের চেয়ে অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে!!!!!
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে জ্বরাগ্রস্ত ধ্বজভঙ্গ যুরার (যুক্তরাজ্য) যে ২০ টি জ্বালানি শক্তি কোম্পানি ২০২০ থেকে এ পর্যন্ত ৫১৪ বিলিয়ন পাউন্ড লাভ ও মুনাফা (profit) আয় করেছে তারা কি এই ১২৮০০০ জনের মৃত্যু ঠেকাতে পারে না ? এতে কত খরচ হবে? অন্তত: পক্ষে শীতকালে তারা কি জ্বরাগ্রস্ত ধ্বজভঙ্গ যুরার (যুক্তরাজ্য) জ্বালানি দারিদ্রের শিকার জনগোষ্ঠীকে ফ্রি (মাগনা) বা অত্যন্ত স্বল্প মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ করলে কি তাদের অর্জিত ৫১৪ বিলিয়ন পাউন্ড মুনাফা সব শেষ হয়ে যাবে?!! হ্যাঁ এ কাজ করলে লাভ ও মুনাফার পরিমাণ বেশ কিছুটা কমে যাবে। তাই বলে কি লাভ ও মুনাফার চেয়ে মানব জীবন মূল্যহীন?গরীব দারিদ্র ক্লিষ্ট মানুষের জীবনের দাম নেই?!!!
এ থেকে আরো প্রমাণিত হয় যে জ্বরাগ্রস্ত যুরায় (যুক্তরাজ্য) নির্দয়,নির্মম,পাষাণ,গণনিধনকারী, নিষ্পেষনকারী,মুনাফাখোর,দুর্নীতি পরায়ণ,বেইনসাফীমূলক চরম স্বার্থপর ধনতন্ত্র (capitalism) কায়েম রয়েছে এবং ধনী কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানসমূহ কেবল নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ, লাভ ও মুনাফা ছাড়া আর কিছুই চিন্তা করে না ও ভাবে না।দরিদ্র জনগণের জীবন-মৃত্যু নিয়ে তাদের মাথা ঘামানোর সময় নেই।
অতএব প্রমাণিত হল যে তথাকথিত পশ্চিমা ধনতন্ত্র ও লিবারেলিজম আসলে জনগণ ও জাতিসমূহের দারিদ্র ও দু:খ-দুর্দশার অন্যতম মুখ্য ও প্রধান কারণ।
এখন প্রশ্ন হল যারা প্রচুর লাভ ও মুনাফা অর্জন করে নিজেদের লাখ লাখ নাগরিককে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেয় এবং নিজেদের জাতি ও জনগণের অর্থনৈতিক দারিদ্র্য,দুরাবস্থা ও জ্বরাগ্রস্ততার সমাধান করতে পারে না তারা কিভাবে অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক দারিদ্র্য ঘুচাবে এবং আর্থিক দুরাবস্থা ও জ্বরাগ্রস্ততার সমাধান করবে?!! এই পশ্চিমা দেশগুলো এবং জ্বরাগ্রস্ত ও ধ্বজভঙ্গ যুরা (যুক্তরাজ্য) নিজেদের জাতির প্রতি যদি এত বেরহম, নির্দয়,নির্মম,পাষাণ হয় তাহলে কি অন্য সকল অশ্বেতাঙ্গ জাতিসমূহের প্রতি তারা রহম দিল,দয়ার্দ্র ও দয়ালু থাকবে এবং মায়া-মমতা প্রদর্শন করবে?
আর এখান থেকে প্রমাণিত হয় যে গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলে বিখ্যাত যুরার (যুক্তরাজ্য) গণতন্ত্রের প্রকৃত যথার্থ স্বরূপ ও হাকিকত।আসলে যুরার (যুক্তরাজ্য) গণতন্ত্র আসলে ধনতন্ত্র নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র যা হচ্ছে প্রকৃত প্রস্তাবে গণভাওতাতন্ত্র এবং এ থেকে আরো প্রমাণিত হয় যে দেশটিতে আদালত (ন্যায় ও ন্যায়পরায়ণতা justice/social justice) সামাজিক ন্যায়পরায়ণতা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত নেই।আর এই একই অবস্থা ও চিত্র কম-বেশি অন্য সকল পশ্চিমা দেশেরও। তাই পশ্চিমাদের লিবারেলিজম,গণতন্ত্র,মানবাধিকার,ন্যায়,বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি সব হচ্ছে অন্তঃসারশূন্য ফাঁকা বুলি ও মাকাল ফল। তবে যেটা যুরা (যুক্তরাজ্য) সহ সকল পশ্চিমা দেশে পুরাদস্তুর বিদ্যমান সেটা হলো ফাক্ ফ্রিডম (fuck freedom) বা অবাধ,অবৈধ,বিকৃত, কুরুচিপূর্ণ,উদ্দাম,লাগামহীন যৌনতা, যৌনাচার,যিনা-ব্যভিচার ও বেশ্যাবৃত্তি এবং এ কারণেই ইউরোপের জনসংখ্যার ৪২% বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে জন্মগ্রহণকারী জারজ অবৈধ সন্তান!!!!
কিন্তু দেশে দেশে ইতর বদমাইশ পাশ্চাত্য পন্থীরা সব সময় পাশ্চাত্য বিশেষ করে যুরা (যুক্তরাজ্য),মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ইত্যাদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাই যারা পশ্চিমাদের বিশেষ করে যুরা (যুক্তরাজ্য), মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র),ফাজুরা (ফ্রান্স) ও গাজুরার (জার্মানি বা গের্মানিয়া) প্রশংসা করে তারাও ঠিক ঐ সব পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশ ও জাতির মতোই ইতর ও বদমাইশ এবং পরকালে ওদের হাশর-নশর এই যুরা,মাযুরা, ফাজুরা,গাজুরা অর্থাৎ ইতর-বদমাইশ পশ্চিমাদের সাথেই হবে এবং এদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম।কারণ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:যারা যাদের ভালবাসে পরকালে তাদের সাথেই হবে তাদের হাশর-নশর।
ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান,