তিনি প্রতিরোধের মশাল ইয়েমেনের নেতার হাতে তুলে দিয়েছিলেন, যাতে পবিত্র স্থানসমূহ মুক্তির প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়। তাদের এই ভালোবাসা এমন এক শৃঙ্খল সৃষ্টি করেছে যা বৈরুত ও সানআ’কে যুক্ত করেছে এবং শত্রুর সব বিভাজনমূলক ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করেছে।”
তিনি এই মন্তব্য করেন সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ, হিজবুল্লাহর প্রয়াত মহাসচিবের শাহাদাতের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে।
নাসরুল্লাহর নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য
জুনায়েদ বলেন, “শহীদ নাসরুল্লাহর মক্তব আসলে মুহাম্মদী ও আলবীয় নূরের ধারাবাহিকতা। তিনি ইমাম হুসাইন (আ.) থেকে শিখেছিলেন কিভাবে পরাজিতদের অন্তর থেকে বিজয়ের পথ বের করতে হয়। তিনি প্রতিরোধকে একটি ধারণা থেকে সমাজে, আর সমাজ থেকে এক শক্তিশালী জাতিতে রূপ দিয়েছিলেন।”
তার বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ছিল: গোপন রাষ্ট্রের স্থপতি: প্রতিরোধকে একটি সুসংগঠিত সামরিক ও সামাজিক ব্যবস্থায় রূপান্তর। বর্ণনার জাদুকর: শহীদকে সেনা, আর ক্ষেপণাস্ত্রকে ইতিহাসে পরিণত করা। নমনীয়তার দার্শনিক: নীতির দৃঢ়তা ও কৌশলগত নমনীয়তা একত্র করা। একক কণ্ঠের প্রকৌশলী: বৈচিত্র্যময় কণ্ঠকে এক প্রতিরোধী ভাষায় পরিণত করা।
প্রতিরোধের ভবিষ্যৎ
তিনি বলেন, “শাহাদাত শেষ নয়, বরং শত্রুরা যে বীজ মাটিতে রোপণ করেছে, সেখান থেকে নতুন যোদ্ধার জন্ম হবে। নাসরুল্লাহ তার অনুপস্থিতির জন্য পূর্বপ্রস্তুতি রেখে গিয়েছিলেন— দৃঢ় কাঠামো ও সুপরিকল্পিত প্রোগ্রাম প্রতিরোধকে টিকে থাকতে সাহায্য করবে।”
নাসরুল্লাহ ও কোরআন
জুনায়েদ বলেন, “তিনি ছিলেন জীবন্ত কোরআন। তার সিদ্ধান্তগুলো আল্লাহর বাণী থেকে অনুপ্রাণিত ছিল— যেমন (আনফাল ৬০) ‘যতটুকু সম্ভব শক্তি প্রস্তুত করো’ এবং (বাকারা ১৯৪) ‘যে আক্রমণ করবে, তার সমপরিমাণ প্রতিরোধ করো।’ তিনি এই আয়াতগুলোকে বাস্তব সামরিক কৌশলে রূপ দিয়েছিলেন।”
ফিলিস্তিনের প্রতি অবস্থান
তিনি বলেন, “নাসরুল্লাহ একমাত্র আরব নেতা, যিনি কখনও ফিলিস্তিনকে বিক্রি করেননি। তিনি প্রতিরোধকে পাথরের যুগ থেকে নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্রের যুগে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আজ গাজার স্থিতিশীলতা তার সুপরিকল্পিত চিন্তার ফল।”
ইরানের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য
জুনায়েদ আরও বলেন, “নাসরুল্লাহর আনুগত্য ছিল অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন— এটি অন্ধ আনুগত্য নয়, বরং কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি। এমনকি নেতানিয়াহুও স্বীকার করেছিল যে, আমি ভেবেছিলাম ইরান নাসরুল্লাহকে নেতৃত্ব দেয়, অথচ নাসরুল্লাহ ইরানকে নেতৃত্ব দিতেন।”
ইয়েমেনের নেতার প্রতি ভালোবাসা
তিনি উল্লেখ করেন, “নাসরুল্লাহ ও আবদুলমালিক হুথির মধ্যে যে ভালোবাসা, তা আধ্যাত্মিক সম্পর্ক। নাসরুল্লাহ কামনা করতেন, যদি তিনি হুথির পতাকার নিচে সৈনিক হতে পারতেন। তিনি প্রতিরোধের মশাল হুথির হাতে দিয়েছেন।”
জুনায়েদ উপসংহারে বলেন, “নাসরুল্লাহ প্রতিরোধের ধারণাকে মৃত্যুকে জীবন, পরাজয়কে বিজয়, আর আত্মসমর্পণকে নেতৃত্বে রূপান্তরিত করেছিলেন। তার মক্তব নবীদের মক্তবের ধারাবাহিকতা— যা চিরকাল সন্ত্রাসীদের আতঙ্কিত করবে এবং অত্যাচারীদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করবে।”
সংলাপ: জাওয়াদ পারসামেহর
4307802#