
ইকনা’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাঈম কাসেম বলেন — “আমরা সেই দল, যারা ইসলামের বিশুদ্ধ মুহাম্মদী শিক্ষার অনুসারী। প্রতিরোধ কেবল একটি যুদ্ধ নয়, এটি একটি জীবনধারা। আমরা অটল, দৃঢ় ও ক্লান্তিহীন। হিজবুল্লাহ কঠিনতম আঘাতের পরও আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনো ক্লান্ত হই না এবং ক্লান্তির কারণে আত্মসমর্পণ করা আমাদের স্বভাব নয়। হিজবুল্লাহর পথ দৃঢ় ও অবিচল। এই পথই শাহাদতের চেতনা সৃষ্টি করে। আমি নিজে একজন শাহাদতপ্রত্যাশী, তবে হিজবুল্লাহর প্রতিটি সদস্যই শাহাদতের মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে চলে। ‘ওলি আল-বাস’ অভিযানের সাফল্য কোনো ব্যক্তির নয়—এটি সমগ্র প্রতিরোধের অর্জন।”
নাঈম কাসেম জানান, “হিজবুল্লাহ কোনো একক ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত হয় না। আমি কখনো একা নই; সিদ্ধান্তগুলো পরামর্শ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে নেওয়া হয়। আমি সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। যুদ্ধ চলাকালীন আমি লেবানন ত্যাগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি, কারণ আমি মনে করেছি, দেশে থাকা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য।”
তিনি বলেন, “সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদতের পর আমি অবিলম্বে দায়িত্ব গ্রহণ করি এবং সৈয়দ হাশেম সাফিউদ্দিনের সঙ্গে সমন্বয় করি যে, তিনিই সামরিক কার্যক্রম তদারক করবেন, আর আমি রাজনৈতিক বিষয়গুলো পরিচালনা করব। ভাইয়েরা আমাকে ৯ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।”
নাঈম কাসেম দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “এটি সত্য নয় যে ইরানিরা যুদ্ধ পরিচালনা করেছে। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা কঠিন দশটি দিন অতিক্রম করেছি, এরপর পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়। আমরা নিজেদের সংগঠিত করেছি, বিভিন্ন পদ পূরণ করেছি, এবং সব ভাইয়েরা সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব, সামরিক কমান্ড ও পরামর্শক পরিষদ একত্রে যুদ্ধ পরিচালনা করেছে।”
হিজবুল্লাহ মহাসচিব আরও বলেন, “ইমাম খামেনেয়ি আমাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। তিনি ঘনিষ্ঠভাবে যুদ্ধের ধারা, ফলাফল ও প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন। আমি আমিরুল মুমিনিন আলি (আ.)-এর বাণীর সঙ্গে একমত—‘আল্লাহই যথেষ্ট অভিভাবক।’”
তিনি আরও জানান, “‘ওলি আল-বাস’ অভিযানে সামরিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে মহাসচিব ও সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে পূর্ণ সমন্বয় ছিল। নেতানিয়াহুর বাসভবনে হামলা ছিল এক বিরাট গোয়েন্দা সাফল্য, আর তেলআবিবে আক্রমণ ছিল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফল। পুরো যুদ্ধের সময় একটি সমন্বিত রাজনৈতিক-সামরিক কমান্ড ও কন্ট্রোল ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল।”