
বার্তা সংস্থা ইকনা: অ্যাকশন কমিটির আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট আইনজীবী জাফরইয়াব জিলানী বলেন, ‘আমরা সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শকে স্বাগত জানাচ্ছি কিন্তু আমরা আদালতের বাইরে নিষ্পত্তিতে রাজি নই।’    
আজ (মঙ্গলবার) সুপ্রিম কোর্টের  প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর বলেন, ‘এটি খুব স্পর্শকাতর বিষয়, এর সঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ভাবাবেগ জড়িয়ে রয়েছে। দুই পক্ষ  সংলাপের মাধ্যমে সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা করুন। এটা আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হওয়াই ভালো। একান্তই যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হয়, তখন  আদালত হস্তক্ষেপ করবে।’  প্রয়োজন হলে তিনি নিজেও এ নিয়ে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত বলেও প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন।  
আগামী ৩১ মার্চ পুনরায় ওই বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বিজেপি’র সিনিয়র নেতা সুব্রমনিয়াম স্বামী সুপ্রিম কোর্টে ওই ইস্যুতে দ্রুত শুনানি করার আবেদন  জানিয়েছিলেন।
বাবরী মসজিদ অ্যাকশন কমিটির অন্যতম সদস্য সাইয়্যেদ কাশিম রসুল ইলিয়াস আজ বলেন, ‘আলাপ আলোচনার অর্থ আত্মসমর্পণ। তিনি বলেন, ‘এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় (২০১০ সালে) আসার আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভি পি সিংয়ের আমলে কয়েক দফায় আলোচনা হলেও তাতে কোনো ফল হয়নি।’   
ইলিয়াস বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, অন্যপক্ষ যখন বলেই দিয়েছে, এটা রাম জন্মভূমি, এটা আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, একে আপনারা ছেড়ে দিন, তাহলে আমরা পরবর্তীতে কী কথা বলব?’        
তিনি বলেন, ‘আদালতের কাছে মামলাটি সমঝোতা করানোর জন্য যায়নি, এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য গেছে। আদালতের কাজ ‘ইনসাফ’ করা সমঝোতা করানো নয়।’ তার মতে, সুপ্রিম কোর্ট যে ফায়সালা দেবে তা গৃহীত হবে।’ 
বিজেপি নেতা সুব্রমনিয়াম স্বামীর দাবি, ‘ওখানে রাম মন্দির আগেও ছিল তাই রাম মন্দির ওখানেই তৈরি করতে হবে। মসজিদ যেকোনো স্থানে তৈরি হত পারে। সরযূ নদীর ওপারে মুসলিমরা মসজিদ নির্মাণ করতে পারে।’
তার দাবি,  নামাজ যেকোনো জায়গায় পড়া যায় কিন্তু রামচন্দ্রের জন্মভূমি কখনো পাল্টানো সম্ভব নয়।
মাওলানা কালবে জাওয়াদ
এদিকে, ভারতের প্রখ্যাত শিয়া আলেম মাওলানা কালবে জাওয়াদ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়কেই তারা গ্রহণ করবেন। এর আগে আদালতের বাইরে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হলেও কোনো ফল হয়নি।
ভারতের দিল্লির ঐতিহাসিক জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সাইয়্যেদ আহমদ বুখারী অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নিস্পত্তির কথা বলেছেন। তিনি অবশ্য দেশের বাইরে থাকায় ফিরে এসেই এ নিয়ে কথা বলতে চেয়েছেন।
মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মন্তব্য, আমার আশা, সুপ্রিম কোর্ট অবমাননা সংক্রান্ত আবেদনেরও নিষ্পত্তি করবে যা ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের সময় থেকে মুলতুবি রয়েছে।
বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র আদালতের মন্তব্য ব্যাপকভাবে অধ্যায়ন করে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ একসঙ্গে বসে সমাধানের কথা জানিয়েছেন।  
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীরা বাবরী মসজিদের স্থানকেই রামের জন্মস্থান বলে দাবি করে আসছে। সূত্র: parstoday