IQNA

ফাতেমা যাহরার (আ.) খুতবা ফেদাক দখলকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে

0:24 - February 13, 2018
সংবাদ: 2605040
রাসূলুল্লাহর (সা.) ওফাতের মাত্র কয়েক দিনের মাথায় মুসলমানদের মধ্যে একটি বিপথগামী গোষ্ঠী যখন আহলে বাইতের (আ.) ন্যায়সঙ্গত অধিকারকে ভূ-লুণ্ঠিত করেছিল, তখন নবী নন্দিনী হযরত ফাতেমা যাহরা (সা. আ.) মসজিদে নববীতে এসে এক ঐতিহাসিক খুতবার মধ্য দিয়ে উক্ত গোষ্ঠীর অপতৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং খেলাফত ও বাগে ফেদাক দখলকারীদের মুখোশ উন্মোচন করেন।

 

বার্তা সংস্থা ইকনার রিপোর্ট: ইরানের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন জনাব জাবিহি ফাতেমা যাহরার (আ.) শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে শাবিস্তান প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেছেন যে, নবী নন্দিনী (সা. আ.) তার শাহাদতের মাত্র কয়েক দিন আগে মসজিদে নববীতে এসে আনসার ও মুহাজিরদের সম্মুখে এক ঐতিহাসিক খুতবা দান করেন। তিনি এ খুতবাতে প্রথম ও দ্বিতীয় খলিফা কর্তৃক বাগে ফাদাক জবর দখলের প্রতিবাদ জানান। এ কারণে এ খুতবাটির নাম খুতবায়ে ফাদাকিয়্যাহ হিসেবে প্রসিদ্ধ হয়েছে।

বাগে ফাদাক মদীনার একটি উর্বর ভূমির নাম; যা রাসূল (সা.) স্বীয় কন্যা ফাতেমা যাহরাকে (সা. আ.) উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। কিন্তু রাসূলের (সা.) ওফাতের পর তা জবর দখল করে নেয়া হয়।

তিনি বলেন: যদি হযরত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.) এ ঐতিহাসিক খুতবাটি পর্যালোচনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে, তিনি এ খুতবাতে রাসূলের (সা.) ওফাতের পর একশ্রেণীর সাহাবিদের মাঝে বিচ্যুতি, আহলে বাইতের (আ.) প্রতি অবিচার এবং রাসূল (সা.) কর্তৃক ঘোষিত স্থলাভিষিক্ত আমিরুল মু'মিনিন আলীর (আ.) অধিকার হরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি আবারও মুসলমানদের নবুয়তের পর ইমামতের গুরুদায়িত্ব সম্পর্কে মুসলমানদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন: যদি কেউ মনে করে যে, বাগে ফাদাক পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে ফাতেমা যাহরা (সা. আ.) এ খুতবা দিয়েছেন, তাহলে চরম ভুল হবে; কেননা খাতুনে জান্নাতের নিকট এমন পার্থিব একটি ভূ-খণ্ড আদৌ গুরুত্ব রাখে না। বরং তিনি এ খুতবার মাধ্যমে মুসলমানদের সচেতন করার চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন: এ ঐতিহাসিক খুতবার একটি বিশাল অংশই আমিরুল মু'মিনিন আলীর (আ.) খেলাফত ও ইমামতের বিষয়কে ঘিরে। কারণ তিনি এটা খুব সহজেই বুঝতে পারছিলেন যে, মুসলমানরা যদি ইমামতের পথ থেকে দূরে সরে যায়, তাহলে তাদের জন্য নির্ঘাত বিচ্যুতি অপেক্ষা করছে। তাই তিনি এ খুতবার বিভিন্ন অংশে মুসলমানদের নবুয়তের পর ইমামতের দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন: নবী নন্দিনী হযরত ফাতেমা যাহরার (সা. আ.) নিকট এটা খুবই সুস্পষ্ট ছিল যে, যদি মুসলমানরা আল্লাহ ও রাসূল (সা.) কর্তৃক ঘোষিত ইমাম তথা আমিরুল মু'মিনিন আলীকে (আ.) ত্যাগ করে, তাহলে ইসলামের প্রকৃত গতি অন্য দিকে মোড় নিবে। আর পরিণতিতেই তাই হলো যখন মুসলমানরা তার ফরিয়াদে সাড়া দেয়নি, তখন কিছু স্বার্থবাদি তথাকথিত সাহাবি মুসলমানদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে।

ইমামতের গুরুত্ব সম্পর্কে নবী নন্দিনী (সা. আ.) বলেছেন যে, ইমামতের বিষয়টি কাবা শরিফের ন্যায়। যেমনভাবে পবিত্র কাবাকে ঘিরে সবাই পরিবৃত্ত হয়, তেমনভাবে মুসলমানদের উচিত মাসুম ইমামকে ঘিরে পরিবৃত্ত হওয়া এবং ইমামগণের হেদায়েত থেকে উপকৃত হওয়া।   

captcha