IQNA

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী;

ইরানের দিকে চোখ তুলে তাকালে আগ্রাসী শক্তিকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে

18:54 - September 21, 2020
সংবাদ: 2611513
তেহরান (ইকনা): ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ইরাকের সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দামের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার দেশের চূড়ান্ত বিজয় প্রমাণ করেছে, ইরানের দিকে চোখ তুলে তাকালে আগ্রাসী শক্তিকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হয়। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে আজ (সোমবার) থেকে পবিত্র প্রতিরক্ষা দিবসের অনুষ্ঠান পালন শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রতিরক্ষা যুদ্ধে (ইরাক-ইরান যুদ্ধ) অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের এক সমাবেশে ভাষণ দেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।

আজ (সোমবার) সকালে পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, “যখন একটি দেশ আত্মরক্ষার চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে তখন যেকোনো আগ্রাসী শক্তি সেই দেশের দিকে চোখ তুলে তাকাতে দু’বার ভাবে। কারণ, ওই শক্তি জানে আগ্রাসন চালালে তাকে চরম মূল্য দিতে হবে।”

ইরানে আজ (সোমবার) থেকে পবিত্র প্রতিরক্ষা দিবসের অনুষ্ঠান পালন শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রতিরক্ষা যুদ্ধে (ইরাক-ইরান যুদ্ধ) অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।

ফার্সি ১৩৫৯ সালের ৩১ শাহরিভার (১৯৮০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর) ইরাকের তৎকালীন শাসক সাদ্দাম ইরানে আগ্রাসন চালায়। ওই আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট যুদ্ধ আট বছর স্থায়ী হয়। এ উপলক্ষে ইরানে প্রতি বছর ২১ সেপ্টেম্বর থেকে টানা এক সপ্তাহ ধরে 'পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহ' পালিত হয়।

ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে দেয়া ভাষণে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর সৃষ্ট ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে অঙ্কুরেই ধ্বংস করে দেয়ার জন্য ইরাকের মাধ্যমে ইরানের ওপর ওই যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। বিশ্বের তৎকালীন দুই পরাশক্তি আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হাতে হাত মিলিয়ে ওই যুদ্ধে ইরাককে সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল। কিন্তু এতসব সত্ত্বেও ওই যুদ্ধে ইরানের নিশ্চিত বিজয় হয়।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী প্রতিরক্ষা যুদ্ধে ইরানের বিজয়ের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, আট বছর সারাবিশ্বের সকল শক্তির সম্মিলিত পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে ইরাকের আগ্রাসী বাহিনী ইরানের এক বিঘত ভূমিও দখলে রাখতে পারেনি। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইসলামি বিপ্লবকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে ওই যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হলেও তাদের সে লক্ষ্য তো অর্জিত হয়ই নি, উল্টো ইসলামি বিপ্লব যুদ্ধ শুরুর আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, অথচ এর আগের দুইশ’ বছরে ইরান যে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে তাতেই পরাজিত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইরানের কাজার শাসক এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইরানের পাহলাভি শাসক নিজেদের নিরপেক্ষতা ঘোষণা করেন। কিন্তু তারপরও দুই যুদ্ধেই বিদেশি সেনা ইরানে অনুপ্রবেশ করে ও সাময়িকভাবে এ দেশকে দখল করে নেয়। আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন ও সোভিয়েত সেনারা এই তেহরানে দম্ভের সঙ্গে প্যারেড করেছে। তিনি বলেন, এই যখন ছিল ইরানের অতীতের অবস্থা তখন ইসলামি বিপ্লবের পর ইসলামপ্রিয় যোদ্ধারা তাদের দেশের এক ইঞ্চি ভূমিও বিদেশিদেরকে দখল করতে দেননি।

পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাকেরি, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি উপস্থিত ছিলেন।  iqna

captcha