IQNA

কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ব্যক্তিদের চরিত্র – ২৬

হারুন; একজন ঐশী নবী এবং ভ্রাতৃত্বের উদাহরণ

20:58 - January 28, 2023
সংবাদ: 3473242
তেহরান (ইকনা): নবীদের ইতিহাস অধ্যয়ন করে, আমরা তাদের প্রত্যেকের বিশেষ বৈশিষ্ট্য পেতে পারি; উদাহরণ স্বরূপ, হযরত হারুন বাগ্মী ছিলেন এবং তার কথার প্রভাব এতটাই ছিল যে হযরত মূসা (আ.) তার মিশন অব্যাহত রাখার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে হারুনকে নিজের পাশে রাখার জন্য আহ্বান করেছিলেন।
হারুন হলেন মহান আল্লাহর প্রেরিত একজন নবী যি,নি হযরত মুসা (আ.)-এর ভাই হিসেবেও পরিচিত। হারুনের পিতার নাম ইমরান এবং মায়ের নাম ইয়োকাবেদ। যদিও হারুন মূসার চেয়ে বড় ছিলেন, তবুও একজন নবী হিসেবে মূসার পরে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে হারুনের নাম বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে; যেমন: বাকারা, নিসা, আনয়াম, আ'রাফ, ইউনুস, মারইয়াম, তাহা, আম্বিয়া, মুমিন, ফুরকান, শুয়ারা, কাসা এবং সাফফাত সূরায় হযরত হারুনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিমরা হারুনের নবুওয়াতকে বিশ্বাস করে। ইসলামের নবী (সা.) এর বর্ণনা অনুসারে, হারুন থেকে নবীদের প্রজন্ম অব্যাহত ছিল এবং হযরত ইলিয়াস (আ.) সহ অন্যান্য নবীগণকে তার বংশধর বলে মনে করা হয়।
যখন মূসা (আ.) আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন নবীর পদে ভূষিত হলেন এবং ফেরাউনকে আল্লাহর উপাসনা করার জন্য এবং আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তাকে নিযুক্ত করা হয়েছিল, তখন তিনি আল্লাহর দরবারে তার ভাই হারুনকে তার উজির হিসেবে সাথে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কারণ হারুন ছিলেন একজন বাগ্মী ব্যক্তি এবং তার চিত্তাকর্ষক বক্তৃতা ছিল। এই মিশনে মূসাকে সাহায্য করার অবদান তার রয়েছে।
হারুন সর্বত্র তার ভাইয়ের সাথে ছিলেন এবং তার ঐশ্বরিক লক্ষ্য এবং মিশনগুলি অর্জনের জন্য তার সমস্ত কাজে তার সাথে সহযোগিতা করেছিলেন। এই সাহচর্য ও সহযোগিতার কারণেই আল্লাহ হারুনকে নবীর পদে উন্নীত করেছিলেন। এই বিষয়টি হযরত মুসা (আ.)-এর জন্য আল্লাহর রহমত ও দান ছিল; কারণ এটি তার প্রচারের অগ্রগতি করেছিল।
ইসলামের নবী (সা.) একটি হাদিসে তাঁর (সা.) সাথে হযরত আলী (আ.)এর অবস্থানকে মুসার সাথে হারুনের অবস্থান হিসাবে উপস্থাপন করেছেন।
বানী ইসরাইলিরা যখন মুসার অনুপস্থিতিতে বাছুর পূজার দিকে ফিরেছিল, তখন হারুন ছিলেন মূসার উত্তরসূরি। সর্বাত্মক চেষ্টা করেও তিনি বনী ইসরাইলের এই বিচ্যুতি রোধ করতে পারেননি। মুসা যখন ফিরে আসেন, তখন মাত্র কয়েকজন ব্যতীত সকলে হারুনের বিরোধিতা করে।
ঐতিহাসিকদের মতে, হারুন ১২৩ থেকে ১৩৩ বছর বয়সে এবং মুসার তিন বছর আগে মারা যান। একটি রেওয়াত অনুসারে, হযরত মূসা  (আ.) আল্লাহর নির্দেশে হারুনকে সিনাই পর্বতে (মিশর দেশে) নিয়ে যান এবং সেখানে তিনি একটি পাথরের টুকরোতে ঘুমান এবং ঘুমান্ত অবস্থায় তিনি মারা যান।
জর্ডানের পশ্চিমে, হোর পর্বতের উপরে, হারুনের কবর রয়েছে বলে বর্ণিত হয়েছে। এই পর্বতটি "পেট্রা" এবং "মাউন্ট হারুন" নামেও পরিচিত। এছাড়াও অপর এক বর্ণনা অনুযায়ী, একটি ছোট পাহাড়ের উপর জর্ডানের "ক্যাথরিন আল-সায়াহিয়া" গ্রামে তাকে দাফন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

 

captcha