IQNA

কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ব্যক্তিদের চরিত্র – ৩৫

হযরত ঈসা (আ.)-এর ন্যায় মুজিযার অধিকারী নবী

9:06 - March 26, 2023
সংবাদ: 3473522
নবী ইয়াসা (আ.), যিনি কৈশোরে হযরত ইলিয়াস (আ.) কর্তৃক আরোগ্য লাভ করেন এবং এরপর থেকে তিনি তাঁর শিষ্যত্ব লাভ করেন। হযরত ইয়াসা (আ.) যখন নবী হিসেবে হযরত ইলিয়াস (আ.)-এর স্থলাভিষিক্ত হন, প্রচুর সংখ্যক বনী ইসরায়েলকে খোদার ইবাদতে আমন্ত্রণ জানাতে সক্ষম হয়েছিলেন।


ইয়াসা (আ.) বনী ইসরায়েলের একজন নবী ছিলেন। তাঁর পুরো নাম হচ্ছে ইয়াসা বিন আল-আযুঝ। তিনি ছিলেন হযরত ইলিয়াস (আ.)-এর ছাত্র ও স্থলাভিষিক্ত।
এই দুজন মহান নবীকে নিয়ে অনেক ঘটনা বর্ণিত আছে যেমন, বনী ইসরায়েলের একজন মহিলা যার “ইয়াসা বিন আখতুব” নামে একটি অসুস্থ সন্তান ছিল। তিনি হযরত ইলিয়াস (আ.)-কে শত্রুদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। হজরত ইলিয়াস (আ.) তাকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য তার অসুস্থ সন্তান ইয়াসার জন্য দোয়া করেন এবং সে আরোগ্য লাভ করে। এই মুজিযা দেখে ইয়াসা হযরত ইলিয়াস (আ.)-এর প্রতি ইমান নিয়ে আসে এবং তখন থেকে হযরতের সাথী হয়ে যায়।
অনেকে বলেছেন, হযরত ইয়াসা (আ.) ও হযরত ইলিয়াস (আ.) মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তারা ছিলেন একে অপরের চাচাত ভাই। হযরত ইলিয়াস (আ.)-এর মৃত্যুর পরে তিনি মানুষদেরকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে দাওয়াত করতেন।
হযরত ইয়াসা (আ.) থেকে অনেকগুলো মুজিযার কথা বর্ণিত আছে। যেমন, হযরত ঈসা (আ.)-এর মতো পানির উপরে হাঁটা, মৃতকে জীবিত করা, জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করা।
পবিত্র কুরআনে সূরা আনআমে দুই বার হযরত ইয়াসার নাম এসেছে। সূরা আনআমে বলা হয়েছে যে, তিনি ছিলেন হযরত ইবরাহীমের বংশের কিন্তু তিনি বনী ইসরায়েলের নবী ছিলেন কি না এ বিষয়ে উল্লেখ হয়নি। সূরা সোয়াদে হযরত ইসমাইল (আ.) ও হযরত যুলকিফল (আ.) নবীর নামের পাশে তাঁর প্রশংসা করা হয়েছে।
তাওরাতে এই নবীকে সাফাত পুত্র ইয়াসা বলা হয়েছে। হিব্রু ভাষায় ইয়াসা শব্দের অর্থ ত্রাণকর্তা এবং সাফাত শব্দের অর্থ বিচারক। তিনি অধ্যবসায়ী ও উচ্চ মাকামের অধিকারী ছিলেন।
যখন হযরত ইয়াসা নিজের জন্য উত্তরাধিকারী নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন, বলেন: কে পারবে এই দায়িত্বকে গ্রহণ করতে যে দিনে রোজা রাখবে এবং রাতে ইবাদতে মশগুল থাকবে। বিচার করার সময় কখনোই রাগান্বিত হবেনা। এই শর্তগুলোকে তিনি তিনবার তাঁর জাতির উদ্দেশ্যে বলেন এবং প্রত্যেকবারে এমন একজন যুবক এই শর্তগুলি মেনে নেয় যাকে লোকেরা অসহায় ও মূল্যহীন মনে করত। তৃতীয় দিন হযরত ইয়াসা তাকে নিজের উত্তরাধিকারী বলে ঘোষণা দেন। যেহেতু সে তার ওয়াদার পালন করে আল্লাহ তাকে যুলকিফল নামে প্রশংসা করেন।
সৌদি আরবের শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চল লাঊজাম-এ একটি মাযার হযরত ইয়াসা নবীর কবর বলে প্রচারিত কিন্তু মাযারটি এখন ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া তুরস্কেও তাঁর মাযার আছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

captcha