
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কক্সবাজার শিবিরে আশ্রয় নেয়। এখনো তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পর্যাপ্ত খাবার, চিকিৎসা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ছাড়াই মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। শিবিরে চিকিৎসাকেন্দ্র ও বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে, শিশু ও নারীদের মধ্যে পুষ্টিহীনতা ও রক্তশূন্যতা বেড়ে চলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হলো তহবিল সংকট। যুক্তরাষ্ট্র — যেটি সবচেয়ে বড় দাতা ছিল — সাহায্য ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। চলতি বছরে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় প্রয়োজনীয় ৯৩৪ মিলিয়ন ডলারের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) সতর্ক করেছে যে শিবিরের রান্নার জ্বালানি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে এবং বছরের শেষ নাগাদ খাদ্য মজুদ ফুরিয়ে যাবে।
অন্যদিকে, নতুন করে শরণার্থী সংখ্যা বাড়ছে। শুধু ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১.৫ লক্ষাধিক মানুষ রাখাইনে সামরিক জান্তা ও আরাকান সেনার সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, বাংলাদেশও রোহিঙ্গাদের প্রতি অনীহা দেখাচ্ছে। নিজেদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা সামলাতে থাকা এ দেশটিতে অনেক রাজনীতিবিদ ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে ভোট পাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে অন্যত্র যাওয়ার প্রচেষ্টা বাড়ছে। গত মে মাসে কক্সবাজার থেকে পালানোর পথে একটি নৌকা ডুবে যায়, এতে ৪০০ জনের বেশি শরণার্থী বঙ্গোপসাগরে প্রাণ হারায়।
ইকোনমিস্ট আরও বলেছে, মিয়ানমারে চীনের প্রভাব ও বিনিয়োগ থাকায় তারা চাইলে রাখাইনের পরিস্থিতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
পত্রিকাটির মতে, সবচেয়ে বড় বিপদ হলো এই "ভুলে যাওয়া সংকট" অব্যাহতভাবে উপেক্ষিত হলে রোহিঙ্গারা চিরদিনের জন্য অত্যাচার ও দুর্দশার এক অন্তহীন চক্রে বন্দী হয়ে পড়বে। 4307317#