IQNA

অভাবগ্রস্ত বা অসহায় কেউ সাহায্য চাওয়ার আগেই সহায়তার গুরুত্ব

15:01 - November 10, 2025
সংবাদ: 3478407
ইকনা - ইসলামী সংস্কৃতিতে প্রকৃত দয়া বলতে বোঝায় অন্যদের চাহিদা পূরণের উদ্যোগ নেয়া এবং অভাবগ্রস্ত বা সাহায্যের মুখাপেক্ষীরা সাহায্য চাওয়ার আগেই তাদের সহায়তা দেয়া।
এ বিষয়টি হচ্ছে এমন এক সামাজিক জীবন-শৈলী যা সমাজকে দয়া ও সম্মানে সমৃদ্ধ করে তোলে। মর্যাদা ও শ্রদ্ধাপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে পারে এমন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলোর অন্যতম দক্ষতা হল "অব্যক্ত বিষয়  বুঝতে পারা"।
 
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র যোগ্য উত্তরসুরি আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, যদি কেউ তার ভাইয়ের প্রয়োজনের কথা বুঝতে পারে তাহলে সে তাকে চাওয়ার ঝামেলায় যেন না ফেলে।" অন্য কথায় তিনি বলতে চেয়েছেন যে তোমার ভাই তার চাহিদা বা প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করার আগেই তার প্রয়োজন দেখে নাও এবং তাকে এ বিষয়ে সহায়তা কর।
 
ইসলামী সংস্কৃতিতে বিশ্বাসীদেরকে এমনভাবে একে অপরের চাহিদা পূরণ করতে হবে যাতে কাউকে কারো কাছে কোনো কিছু চাইতে না হয়। এই সংস্কৃতিতে সামষ্টিক সামাজিক জীবন যাপন হল একটি মহতী শিল্প। এ জীবনে, একজন ব্যক্তির সহবিশ্বাসীরা তার ভাই। এই সামষ্টিক জীবনে কেবল ব্যক্তিগত ও ব্যক্তিক চাহিদা পূরণ করাটাই শিল্প নয়, একইসঙ্গে হৃদয়ের অব্যক্ত গোপন রহস্যও দেখতে পারাটা শিল্প বা দক্ষতা।
 
আধুনিক যুগে অনেক মানুষ উপেক্ষিত হওয়ার ভয়ে ও অপমানের আশঙ্কায় সাহায্য চায় না, সম্মান বজায় রাখার আশায় তারা ক্ষুধা ও তৃষ্ণা সহ্য করেন। অথচ হযরত আলীর ভাষায় প্রকৃত দয়া হল কেউ সাহায্যের আবেদন করার আগেই তাকে সাহায্য করা। মানুষের চোখ দেখে তাদের একাকিত্ব ও ভয়গুলো বুঝতে হবে। আর এমন সংস্কৃতি যদি বদ্ধমূল হয়ে যায় আমাদের সমাজে তাহলে কেউই তার অধিকার পাবার ক্ষেত্রে নিজেকে ছোট করার আশঙ্কায় ভুগবে না। অনেকে এ জন্য অতীতকালে গোপনে দান করতেন। তারা গোপনে কারো ঘরে অর্থ ও ত্রাণ রেখে আসতেন যাতে পরদিন সাহায্য লাভকারী ব্যক্তি দানকারীকে চিনতে পেরে তার সামনে নিজেকে ছোট মনে না করেন ও বিব্রত বোধ না করেন। মানুষের সম্মান রক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে বড় মূল্যবোধ। (হাদিস-সূত্র: বিহার আনোয়ার, খণ্ড ৭৪, পৃষ্ঠা ১৬৬) #পার্স টুডে
captcha