নবীগণের জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো যে, তাঁরা ইবাদত, ইসতেগফার, তসবিহ ও দোয়ায় মশগুল থাকতেন। দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট নিজেদের আরজি পেশ করতেন এবং আল্লাহর সহিত আত্মিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন।
তাঁরা উভয়ে বললেন: হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা নিজদের প্রতি জুলুম করেছি, আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তবে আমরা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব। (সুরা: আল্ আ'রাফ, ২৩।)
তাফসিরে মাজমাউল বয়ানে মরহুম তাবারসি বর্ণনা করেন: আদম (আঃ) দোয়া করার সময় কিছু মর্যাদাসম্পন্ন পবিত্র নাম দেখতে পান যা আল্লাহর আরশের উপর লিখা ছিল। তিনি সেই পবিত্র নামগুলোর ব্যাপারে জানতে চাইলে বলা হয়, উনারা হচ্ছেন আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি অর্থাৎ মুহাম্মদ, আলী, ফাতেমা, হাসান ও হুসাইন (আলাইহিমু স্সালাম)। একথা শুনে হযরত আদম (আ.) উক্ত পবিত্র পাঁচ মহামানবের অসিলা করে আল্লাহর নিকট তওবা করেন এবং এই পবিত্র নামসমূহের অসিলায় তাঁদের তওবা কবুল হয়। (মাজমাউল বায়ান ফি তাফসিরিল কোরআন, খঃ ১, পৃঃ ২১০।)
তওবা ও ইসতেগফার কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে নিজের গুনাহ্ ও ভুলকে স্বীকার করা, যেভাবে হজরত আদম ও হাওয়া (আঃ) নিজদের ভুল স্বীকার করেন, ফলে আল্লাহ তায়ালাও তাঁদের তওবা কবুল করেন।
দোয়া করার পদ্ধতি আল্লাহর নিকট হতে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। বিশেষকরে যেভাবে আল্লাহ তায়ালা স্বীয় নবীগণকে শিক্ষা দিয়েছেন সেভাবে দোয়া করতে হবে।
মহানবী (সা.) তাঁর আধ্যাত্মিক সফর মেরাজে যাওয়ার পর নিজের পক্ষ হতে এবং ইমানদারদের পক্ষ হতে নিম্নোক্তরূপে দোয়া করেন: رَبَّنا لا تُؤاخِذْنا إِنْ نَسينا أَوْ أَخْطَأْنا رَبَّنا وَ لا تَحْمِلْ عَلَيْنا إِصْراً كَما حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذينَ مِنْ قَبْلِنا رَبَّنا وَ لا تُحَمِّلْنا ما لا طاقَةَ لَنا بِهِ وَ اعْفُ عَنَّا وَ اغْفِرْ لَنا وَ ارْحَمْنا أَنْتَ مَوْلانا فَانْصُرْنا عَلَى الْقَوْمِ الْكافِرين
হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা যদি ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে আমাদেরকে পাকড়াও করিও না। হে আমাদের রব্! আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছিলে আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করিও না। হে আমাদের রব্! আমাদের উপর এমন কোনো ভার অর্পণ করিও না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আর আমাদের পাপমোচন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি কৃপা কর। তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে জয়যুক্ত কর। (বাকারা- ২৮৬।)#
-শাবিস্তান