IQNA

যেদিন থেকে ইমাম মাহদীর (আ.) ইমামতের সূচনা হয়

0:10 - December 19, 2016
সংবাদ: 2602185
হিজরি ২৬০ সনের ৯ই রবিউল আউয়াল মানব জাতির শেষ ত্রাণকর্তা ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য এবং তাঁর ঘোষিত মুসলমানদের ১২তম ইমাম হযরত ইমাম মাহদী(আ.)'র ইমামত শুরু হয়।
যেদিন থেকে ইমাম মাহদীর (আ.) ইমামতের সূচনা হয়

শাবিস্তানের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: ৮ই রবিউল আউয়াল তাঁর বাবা ইমাম হাসান আসকারি (আ.) শাহাদত বরণ করলে ৫ বছরের ইয়াতিম সন্তান হিসেবেই ইমামতের দায়িত্ব পান তিনি।

ইসলামের ইতিহাসের শেষ নিষ্পাপ ইমাম হযরত ইমাম মাহদী (আ.)'র মা ছিলেন একজন গ্রিক মহীয়সী নারী। তাঁর নাম ছিল নার্গিস। তিনি ছিলেন বাইজান্টাইন সম্রাটের নাতনী। আর মায়ের দিক থেকে ছিলেন হযরত ঈসা নবী (আ.)'র অনুগত সাহাবি সিমিওনের বংশধর।

যাই হোক ইমাম মাহদী (আ.)-কে লালন করা হয়েছে গোপনে আব্বাসিয় শাসকদের হাত থেকে রক্ষার জন্য। কারণ আব্বাসিয়রা এই হাদিস জানতো যে বিশ্বনবী (সা.)'র পবিত্র বংশ বা আহলে বাইতের ধারায় ১২ তম নিষ্পাপ ইমামই হবেন হযরত মাহদী (আ.) তিনি সারা বিশ্বে জুলুম, দুর্নীতি ও বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান করবেন এবং সাম্য, সমৃদ্ধি, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং উন্নয়নের চরম উৎকর্ষ সাধন করবেন।

আর এসব তথ্য জানতো বলেই আব্বাসিয়রা এই ইয়াতিম মাহদী (আ.)-কে খুঁজে বেড়াত হত্যা করার জন্য। কিন্তু মহান আল্লাহ তাঁকে রক্ষা করেছেন স্বল্প মেয়াদের জন্য অদৃশ্য রেখে। তাঁর এই অদৃশ্য থাকার প্রথম মেয়াদকে বলা হয় 'গেইবাতে সুগরা' বা 'স্বল্পকালীন অন্তর্ধান' যার মেয়াদ শেষ হয় ৩২৯ হিজরিতে। এরপর শুরু হয় তাঁর 'দীর্ঘমেয়াদী অন্তর্ধান' বা 'গেইবাতে কুবরা' এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় হযরত ঈসা (আ.)সহ তিনি পুনরায় আবির্ভূত হবেন এবং বিশ্বকে ন্যায়-বিচার, শান্তি ও সার্বিক সমৃদ্ধিতে ভরপুর করবেন।

একটি হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী যে তার নিজ যুগের ইমামকে চিনল না সে যেন জাহিল ও কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করল। অন্য কথায় যে ইমাম এর বাইয়াত বা আনুগত্য করা তার ওপর ফরয ছিল তাঁর বাইয়াত (আনুগত্য) না করেই যদি সে মারা যায়, তবে তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়াত অর্থাৎ কুফ্‌র ও শির্‌কের ওপর। অর্থাৎ সে কাফির বা মুশরিক হিসেবেই মারা যাবে।

উল্লেখ্য, শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের অনেক ধর্মীয় নেতা ও চিন্তাবিদ মনে করেন মানবজাতির শেষ ত্রাণকর্তা হযরত ইমাম মাহদী (আ.) প্রায় ১২০০ বছর আগে জন্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি বিশ্বনবী (সা.)র পবিত্র আহলে বাইতের বংশ ধারায় হযরত ইমাম হুসাইন-আ.র নবম অধস্তন বংশধর। অন্য কথায় তিনি ১১ তম ইমাম হযরত ইমাম হাসান আসকারি (আ.)র পুত্র এবং মহান আল্লাহর নির্দেশে তিনি হযরত ঈসা (আ.)র মত অদৃশ্য হয়ে যান। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় বিশ্বব্যাপী অন্যায়-অবিচার প্রতিরোধের লক্ষ্যে তিনি আবার আবির্ভূত হবেন পবিত্র মক্কায় এবং হযরত ঈসা নবী (আ.) তাঁর পেছনে নামাজ পড়বেন। অবশ্য ঠিক কখন তিনি আবারও আবির্ভূত হবেন তা মহান আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না, (কোনো ইমাম তা জেনে থাকলেও মহান আল্লাহর নির্দেশিত গোপন বিষয় হিসেবে তারা তা প্রকাশ করেননি) যদিও তাঁর আবির্ভূত হওয়ার প্রাক্কালের কিছু লক্ষণ বা আলামতের কথা হাদিসে এসেছে। তিনি সারা বিশ্বে ইসলাম ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। মহান আল্লাহ তাঁর পুনরাবির্ভাব ত্বরান্বিত করুন।

captcha