বাহরাইনের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সেন্টারের প্রধান আহমাদ ওদায়ী বলেন: বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ইসা আলে খালিফ আগুন নিয়ে খেলা করছে। বিশেষ করে আয়াতুল্লাহ শেখ ঈসা কাসেমির ব্যাপারে অনেক কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন: সৌদি আরবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করার একদিন পর জোরপূর্বক আয়াতুল্লাহ শেখ ঈসা কাসেমিকে বন্দি করে রাখে এবং বর্তমানে তিনি আলে খলিফার হাতে বন্দি রয়েছে।
উল্লেখ্য, বাহরাইনের প্রখ্যাত শিয়া আলেম আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেম দেশটিতে গণতন্ত্রের দাবি জানান এবং তিনি স্বৈরাচারী আলে খলিফার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।
তার এই প্রতিবাদ ও সংস্কার আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য আলে খলিফার সরকার তার বিরুদ্ধে কঠোর নীতি গ্রহণ করে। তার এই প্রখ্যাত আলেমের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়, তাকে ১ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে গৃহবন্দি করে রাখে।
প্রায় দুই বছর গৃহবন্দি অবস্থায় থাকার পর তিনি এখন শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বাহরাইনের আলে খলিফা সরকার ২০১১ সাল থেকে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে গণআন্দোলন দমন করে আসছে। সরকার বিরোধী চলমান গণআন্দোলনে সেদেশের ধর্মীয় নেতারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ কারণে অনেক সম্মানিত আলেমকেও নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচার ও জুলুম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
শেখ ঈসা কাসেম বাহরাইনের মানুষের খুবই প্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন ধর্মীয় নেতা। গত ছয় বছর ধরে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলন করার জন্য জনগণকে পরামর্শ দিয়ে এসেছেন। কিন্তু তাই বলে সরকারের জুলুম নির্যাতনের বিষয়ে তিনি কখনো নীরব থাকেননি।
বাহরাইনের স্বৈরসরকার ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েও গণআন্দোলন দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের ধারণা নেতাদেরকে আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে পারলে জনগণের প্রতিবাদ আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়া যাবে। এ কারণে শেখ ঈসা কাসেমকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে আলে খলিফা সরকার। এ লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে সরকার গত বছরের জুনে জনপ্রিয় এই ধর্মীয় নেতার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়। অবৈধ অর্থ আয়, বিদেশি স্বার্থ রক্ষা, সহিংসতায় ইন্ধন যোগানো, সাম্প্রদায়িক সংঘাত বাধানো সর্বোপরি জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তার নাগরিকত্ব বাতিল করে আলে খলিফা সরকার।