পার্সটুডের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: গত ১৬ নভেম্বর ইরানে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের সময় দুর্বৃত্তরা সহিংসতা ও দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা চালায়। এরপর থেকে ইরানের জনগণ দেশব্যাপী ইসলামি সরকার ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানিয়ে মিছিল অব্যাহত রেখেছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, সব ধরণের যুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী বাসিজের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি তেহরানে বাসিজের হাজার হাজার সদস্যের এক সমাবেশে শত্রুর মোকাবেলায় এ বাহিনীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
সর্বোচ্চ নেতা সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের সময় পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ও গোলযোগ সৃষ্টির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য শত্রুরা বহু আগে থেকেই ষড়যন্ত্র করে রেখেছিল এবং এর পেছনে তারা বহু অর্থ ব্যয় করেছে। তারা গোলযোগের সুযোগে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যার পরিকল্পনা করে রেখেছিল। শত্রুরা ভেবেছিল জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি তাদের জন্য সুযোগ এনে দেবে এবং সেই সুযোগে রাস্তায় নেমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে। কিন্তু ইরানের জনগণ শত্রুদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে।"
শত্রুদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদ ও মিছিলের প্রতি ইঙ্গিত করে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আরও বলেন, ইরানের বিভিন্ন শহরে জনতা যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদ ও ইহুদিবাদের জন্য চপেটাঘাত এবং এর ফলে শত্রুরা পিছুহটতে বাধ্য হয়েছে।
ইরানের ইসলামি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শত্রুদের অব্যাহত হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসলামি নীতি-আদর্শ ও মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে ইসলামি ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এবং ইসলাম ধর্ম হচ্ছে ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার ঝাণ্ডা।
ওই প্রজেক্ট বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইরানে তেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে পরিকল্পিতভাবে গোলযোগ বাধানো হয়েছিল। কিন্তু ইরানের বাস্তবতা ও জগণের শক্তির বিষয়টি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে মূলত আমেরিকার ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যেমনটি বলেছেন, "ইরানের পতন ঘটানোর জন্য গত ৪০ বছরে আমেরিকা সব রকম চেষ্টাই চালিয়েছে। কিন্তু ইরান দিন দিন শক্তিশালী হয়ে ওঠায় শত্রুরা হতাশ হয়ে পড়েছে।"
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুর সার্বক্ষণিক হুমকির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, "ইসলামি মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত। ইসলাম হচ্ছে সত্যিকারের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের প্রতীক। অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদীরা সবসময়ই স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের বিরোধী। আর এ কারণেই বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো ইসলামি ইরানের বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অবস্থানের বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরে বলেছেন, সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো সবসময়ই জাতিগুলোর স্বাধীনতার বিরোধী। আমেরিকা সরাসরি এও বলেছে সিরিয়ার তেলের জন্যই তারা সেখানে অবস্থান করছে। এমনকি ইরাক সরকারের অনুমতি না নিয়েই সেদেশে মার্কিন সেনা মোতায়েন রাখা হয়েছে।" iqna