IQNA

সৌদি আরবে;

বাদশাহের মৃত্যুর ঘণ্টা এবং ক্রাউন প্রিন্সের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা

20:47 - March 07, 2020
সংবাদ: 2610371
তেহরান (ইকনা)- সৌদি বাদশাহের মৃত্যুর জল্পনা-কল্পনা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সেদেশের ক্রাউন প্রিন্সকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য অন্যান্য প্রিন্সরা প্রয়াস দেখানোর পর তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসকল প্রিন্সদের গ্রেপ্তারের পর সৌদি আরবের রয়েল প্যালেসে কাঁপন ধরেছে।

“ওয়াতান আল-দাবুর” সংবাদ সংস্থা এক প্রতিবেদনে লিখেছে, সৌদি বাদশাহের মৃত্যুর জল্পনা-কল্পনা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সেদেশের ক্রাউন প্রিন্সকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য অন্যান্য প্রিন্সরা প্রয়াস দেখানোর পর তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর থেকে রাজ প্রসাদের অভ্যন্তরে অস্থির পরিবেশ বিরাজ করছে।

ইতিমধ্যে কিছু প্রিন্সকে বাদশাহের সাথে দেখা করতে নিষেধ করা হয়েছে। ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে পিতার উত্তরসূরি হিসেবে বিন সালমন সৌদির পরবর্তী বাদশাহ হাওয়ার কথা রয়েছে। তবে, সৌদি কোন আমিরই চায়না যে, অল্প বয়সী ও অনভিজ্ঞ কেউ গদিতে বসুক এবং মধ্যপ্রাচ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ দেশের দায়ভার গ্রহণ করুক।

সৌদি রাজকুমাররা বিন সালমানের কাছ থেকে গদি দখল করার জন্য রাজার মৃত্যুর অপেক্ষায় রয়েছেন এবং পূর্ণ ক্ষমতায় পৌঁছানোর পূর্বেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা করেছেন। আর এজন্য বিন সালমান রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হচ্ছে।

একারণে বিন সালমান প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছে। আর এই ঘটনাটি তার উত্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এরফলে ক্রাউন প্রিন্সের মধ্যে উত্তেজনা এবং উন্মাদনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় বিন সালমান তার উদ্দেশ্য (সিংহাসনে) পৌঁছানোর জন্য যাকে বাধা মনে করছে তাকে কারাগারে পাঠাচ্ছে।

এদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সৌদি কর্মকর্তারা সেদেশের প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল আজিজ এবং প্রাক্তন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন নায়েফকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। এই দু’জনের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড অপেক্ষা করছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফের ভাই আমির নাওয়ায়েফ বিন নায়েফ’ও রয়েছেন। রয়্যাল গার্ড বাহিনী মুখোশ পরে শুক্রবার সকালে আহমেদ বিন আব্দুলাজিজ এবং মোহাম্মদ বিন নায়েফের বাড়িতে তল্লাশি করে এবং তাদেরকে সেখান থেকে আটক করে।

নিউইয়র্ক টাইমসও গুরুত্বারোপ করে উল্লেখ করেছে, প্রাক্তন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পর থেকেই তাকে গৃহবন্দিরত অবস্থায় থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। সৌদি আরব এবং রাজপরিবারে সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে এসকল প্রিন্সদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারণ, করোনাভাইরাসের প্রকোপে মোহাম্মদ বিন সালমানের আদেশ মসজিদুল হারাম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, যেসকল সৌদি কর্মকর্তা এবং প্রিন্সরা বিন সালমানের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেছে এবং তার বিরোধিতা করেছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত প্রিন্স ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে যে, তারা আর কখনোই মুক্তি পাবে না। সৌদি আরবে কোন অলৌকিক ঘটনা বা সেদেশের জনগণ ও অন্যান্য প্রিন্সের মাধ্যমে বড় অভ্যুত্থান না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাদণ্ডে থাকতে হবে অথবা এরমধ্যে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।

সৌদি আরবের খ্যাতনামা টুইটার ব্যবহারকারী মুজতাহিদ টুইট করেছেন, প্রিন্সদের গ্রেপ্তারের ঢেউ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে বিন সালমান শীঘ্রই এদেশের বাদশাহ হতে যাচ্ছেন। তিনি তার টুইট বার্তায় সৌদি পরিবারের মধ্যে ব্যাপক বিরোধিতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।  iqna

 

captcha