IQNA

ইরানের তাবাস মরুতে ব্যর্থ মার্কিন কমান্ডো অভিযান

19:24 - April 25, 2020
সংবাদ: 2610662
তেহরান (ইকনা)- আজ থেকে ৪০ বছর আগে ১৯৮০ সালের এই দিনে ইরানে হামলা করতে আসা ৫ টি মার্কিন সামরিক বিমান ও হেলিকপ্টার অলৌকিক ধূলি-ঝড়ের শিকার হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।

তাবাস মরুতে পড়ে থাকে সেইসব সামরিক বিমান ও হেলিকপ্টারের জ্বলন্ত ধ্বংসাবশেষসহ পাইলট, নিহত কমান্ডো সেনা আর ক্রুদের পুড়ে যাওয়া দেহ। এ ঘটনাকে আধুনিক যুগে ইসলামী অলৌকিকতার অনন্য নিদর্শন হিসেবে দেখা হয়।

অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর পরিদর্শনে দেখা যায়- একটি হেলিকপ্টার এবং সি-১৩০ হারকিউলেস পরিবহন বিমান পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ধ্বংস হয়েছে এবং পাঁচটি হেলিকপ্টার ও গানশিপ বালির মধ্যে পড়ে রয়েছে। অভিযানে অংশ নেয় মার্কিন সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী এবং মেরিন কমান্ডোরা।

ব্যর্থ এ অভিযানের বার্ষিকীতে প্রতি বছর তাবাস শহর ও এর আশপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ যোগ দেন। মার্কিন বাহিনীর অভিযানে ধ্বংস হওয়া বিমান ও হেলিকপ্টার প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয় এ অনুষ্ঠানে।

রাতের আঁধারে কি ঘটতে যাচ্ছে সে বিষয়ে ঘুমন্ত জনগণ তো দূরের কথা ইরানের ইসলামী সরকারের মুনাফিক প্রেসিডেন্ট বনি-সদর ছাড়া অন্য কেউই ও ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর কেউই কিছু জানত না! ব্যর্থ ওই অভিযানের পর ঘটনাস্থল থেকে যাতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ ও নিদর্শন ইরানের ইসলামী সরকার উদ্ধার করতে না পারে সে জন্য বনি-সদর বিধ্বস্ত মার্কিন বিমানগুলোর ওপর গোলা বর্ষণের নির্দেশ দেয়।

রাতের আঁধারে পরিচালিত এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল তেহরানে বিপ্লবী ছাত্রদের হাতে দখল হওয়া মার্কিন দূতাবাস এবং সেখানে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য অভিযুক্ত ও আটক মার্কিন কূটনীতিকদের উদ্ধার করা ও একইসঙ্গে সম্ভব হলে ইরানের নতুন ইসলামী বিপ্লবী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা। তেহরানস্থ তৎকালীন মার্কিন দূতাবাস ইরানের ইসলামী সরকারসহ এ অঞ্চলের জনগণের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও গুপ্তচরবৃত্তির আস্তানা হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকায় বিপ্লবী ছাত্ররা তা দখল করে নেয় এবং কূটনীতিকের ছদ্মবেশধারী মার্কিন গুপ্তচরদেরকে ৪৪৪ দিন পর্যন্ত আটক করে রাখে। এখানে তারা অস্ত্র ও গুপ্তচরবৃত্তির নানা সামগ্রী এবং নানা ষড়যন্ত্রের দলিল-প্রমাণ উদ্ধার করে। অবশ্য মার্কিন সরকার ও তাদের স্থানীয় অনুচররা কৌশলে বহু দলিল ধ্বংস করে ফেলে। এই ঘটনার পর মার্কিন সরকার ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

তাবাসে হামলা ব্যর্থ হওয়ায় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ও তার ডেমোক্রেট দল আমেরিকার নির্বাচনে ভরাডুবির শিকার হয়।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার মরহুম ইমাম খোমেনী (র.) এই ঘটনাকে ইসলামী এই দেশের জন্য আল্লাহর অদৃশ্য সাহায্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি অলৌকিক এই ঘটনাকে আবাবিল পাখির মাধ্যমে আবরাহার বিশাল হস্তি-বাহিনী ধ্বংস হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন যা পবিত্র কুরআনের সুরা আল ফিলে উল্লেখ করেছেন মহান আল্লাহ। আবরাহার বাহিনী পবিত্র কাবা ঘর ধ্বংস করতে এসেছিল। ইমাম খোমেনী (র.) তাবাস মরুর ধূলি বা বালুকে খোদার নিযুক্ত বালু-সেনা বলে উল্লেখ করেন।
সূত্র:parstoday

captcha