IQNA

কে কাকে সন্ত্রাসী বলে! দজ্জাল মার্কিন সরকারের মুখে শান্তির ললিত বাণী!

4:09 - May 16, 2020
সংবাদ: 2610788
তেহরান (ইকনা): ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন মার্কিন সরকার হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতীক এবং সন্ত্রাসবাদের প্রতি মার্কিন সরকারের সহায়তা স্পষ্ট।

বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি এই মন্তব্য করেছেন। ইরান সন্ত্রাস-বিরোধী লড়াইয়ে ওয়াশিংটনকে সহযোগিতা করছে না এবং এখনও সন্ত্রাসবাদে সহায়তা দিচ্ছে বলে সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ মন্তব্য করেছে। এসবের জবাবে মুসাভি আরও বলেছেন, মার্কিন সরকার বহু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সৃষ্টি করেছে এবং অর্থ ও অস্ত্রসহ সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে এইসব গোষ্ঠীকে। আর সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতি প্রকাশ্যে সহায়তা ও সমর্থন যোগাচ্ছে ওয়াশিংটন। তাই সন্ত্রাস বিরোধী তৎপরতা সম্পর্কে মতামত রাখার কোনো নৈতিক অধিকার মার্কিন সরকারের নেই বলে মন্তব্য করেছেন মুসাভি।

আসলে বড় বড় শক্তিমান সন্ত্রাসী ও দাম্ভিক শক্তিগুলোর কাজই হল প্রকৃত সন্ত্রাস-বিরোধী শক্তিকে সন্ত্রাসে জড়িত বলে অপবাদ দেয়া। তাই দখলদার ও অবৈধ ইসরাইলের দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা হচ্ছেন সন্ত্রাসী!

সারা বিশ্বে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত মার্কিন সরকারও চোরের মায়ের মতই বড় গলায় কথা বলে আসছে। জাপানে পরমাণু বোমা ও ভিয়েতনামে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারকারী ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের ৭০ বছরের সন্ত্রাসের শরিক ওয়াশিংটন ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়াসহ বিশ্বের বহু অঞ্চলে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত! মার্কিন সরকার সম্প্রতি ইরানের জেনারেল কাসেম সুলায়মানি ও ইরাকি সেনা কমান্ডার আবু মাহদি আল মুহানদিসকে ইরাকে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ করে। অথচ এ সময় সুলায়মানি ছিলেন ইরাকের রাষ্ট্রীয় অতিথি এবং পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রকৃত লড়াইয়ের প্রধান ও সবচেয়ে সফল সেনাপতি!

এ ছাড়াও ইরাক ও সিরিয়ায় সন্ত্রাসে জড়িত তাকফিরি গোষ্ঠী আইএস বা দায়েশসহ নানা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতি মার্কিন সর্বাত্মক সহয়তাও কারো অজানা নয়।

ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও অপরাধযজ্ঞের তালিকা বেশ দীর্ঘ। ৫০'র দশকে সিআইএ'র মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী মোসাদ্দেক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং ৮০'র দশকের শেষের দিকে ইরানের যাত্রীবাহী বিমান ধ্বংস করা, সন্ত্রাসী 'এমকেও' (MKO) নামের ইরান-বিরোধী মোনাফিক গোষ্ঠীসহ ছোটখাটো নানা সন্ত্রাসী চক্রকে লেলিয়ে দিয়ে ইরানের হাজার হাজার নেতা-কর্ম ও জনগণকে হত্যা করার ঘটনা বিশ্ববাসী ভুলে গেলেও ইরানের জনগণ কখনও ভুলতে পারবে না।

ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসও চালিয়ে আসছে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্ত্র ও পরমাণু নিষেধাজ্ঞাসহ অবৈধ নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে। ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি ছাড়াও এইসব সন্ত্রাসের আওতায় রয়েছে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর মত মানবিক ক্ষেত্রের জরুরি নানা পণ্য। এসব অপরাধ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য। ইসলামী ইরান স্বাধীনচেতা ও সাম্রাজ্যাবাদ বিরোধী বলেই দেশটির সঙ্গে মার্কিন সরকারের এত শত্রুতা।
সূত্র: পার্সটুডে

captcha