IQNA

হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ;

ইসরাইলের সাথে কখনই সমঝোতা করবে না হিজবুল্লাহ / সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইসলামিক বিশ্বের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে

21:05 - August 31, 2020
সংবাদ: 2611402
তেহরান (ইকনা): লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ জুলুম ও উৎপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাকে আশুরার প্রধান শিক্ষা বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি রোববার রাজধানী বৈরুতের উপকণ্ঠে শোকাবহ আশুরা উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে এ মন্তব্য করেন।

সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতকে সত্য ও মিথ্যার লড়াই হিসেবে অভিহিত করে বলেন, দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ইচ্ছা পোষণকারী যেকোনো সংগঠনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার শপথ নিয়েছে হিজবুল্লাহ ও প্রতিরোধ অক্ষ।

মার্কিন সরকার ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করতে চায় বলে মন্তব্য করেন হিজবুল্লাহর মহাসচিব। তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধেও অনির্দিষ্টকালের জন্য শত্রুতা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন সরকার। এ অবস্থায় সংগ্রাম ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে আপোষ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে মহা অপমান ও আরব বিশ্বের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলে উল্লেখ করে হিজবুল্লাহ মহাসচিব। তিনি বলেন, ইহুদিবাদীরা পশ্চিম তীর দখল করার পরিকল্পনা বাদ দিতে রাজি না হয়ে কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাছে এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান কেনার বিরোধিতা করে যে বক্তব্য দিয়েছে তাতে আবুধাবি চরম অপমানিত হয়েছে।

তিনি গণমাধ্যমের হামলাকে বর্তমান সময়ে প্রতিরোধ অক্ষের বিরুদ্ধে শত্রুদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল বলে উল্লেখ করেছেন। ২০০৬ সালের যুদ্ধে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে ৩৩ দিনের যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে হেরে যায় ইসরাইল। ইসরাইল ও তার মিত্ররা সেই ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে সিরিয়ায় ইসরাইল-বিরোধী আসাদ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সন্ত্রাসী নানা গোষ্ঠী লেলিয়ে দেয় ২০১১ সালে। কিন্তু ইরান ও হিজবুল্লাহসহ প্রতিরোধ অক্ষের সহায়তায় সিরিয়ার ৯০ শতাংশ ভূখণ্ড এখন দেশটির সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এ ছাড়াও হিজবুল্লাহর জোট ২০১৮ সালের নির্বাচনে লেবাননি সংসদে নিরঙ্কুশ জয় অর্জন করে সরকার গঠনে সক্ষম হয়। ইরাক ও ইয়েমেনেও প্রতিরোধ অক্ষ রাজনৈতিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে বিজয়ী অবস্থায় রয়েছে।

এ অবস্থায় প্রতিরোধ অক্ষের শত্রুরা গণমাধ্যমের হামলা জোরদার করেছে সংগ্রামী এই অক্ষের বিরুদ্ধে। লেবানন, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনের মত দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা সংকটের বিষয়ে বাস্তবতাকে উল্টোভাবে তুলে ধরছে বিজাতীয় এই শত্রুরা। তারা নানা ধরনের গুজব ও মিথ্যা সংবাদ তুলে ধরে হিজবুল্লা'র চেহারাকে জনগণের কাছে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে কেবল পশ্চিমা, আরব ও ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যমগুলোই যে সক্রিয় রয়েছে তা নয়, পশ্চিমা সরকারগুলোর ও তাদের সেবাদাস আরব সরকারগুলোর দূতাবাসও কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে একই কাজ করছে বলে হিজবুল্লাহ-প্রধান উল্লেখ করেছেন। গত ৪০-৫০ বছরের মধ্যে এমন প্রচারণাগত হামলার নজির নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।

শত্রুদের এমন প্রচারণার মোকাবেলায় প্রতিরোধ অক্ষের সুদৃঢ় মিডিয়া-শক্তি না থাকলেও জুলুম ও জালেমের বিরুদ্ধে ইমাম হুসাইনের সংগ্রামী আদর্শের অনুসারী হওয়ার কারণে শত্রুদের প্রচার হামলাও ব্যর্থ হবে বলে হিজবুল্লাহ প্রধান দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ১৯৮২ সালে হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৩৮ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই এ সত্য স্পষ্ট হয়ে যায়।  iqna

captcha