IQNA

ন্যায্য অগ্রগতি অর্জন এবং দারিদ্র্য সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় জ্ঞানভিত্তিক উৎপাদনকে শক্তিশালী করা

19:19 - March 21, 2022
সংবাদ: 3471587
তেহরান (ইকনা): ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান ঘটনাপ্রবাহ একথা প্রমাণ করেছে যে, বৃহৎ শক্তিগুলোর আধিপত্য থেকে মুক্ত থেকে স্বাধীন জাতি হিসেবে টিকে থাকার ইরানি নীতিই সঠিক ছিল। কারো ওপর নির্ভরশীল না থেকে ইরান অকস্মাৎ ঘটে যাওয়া যেকোনো বিপর্যয় থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পেরেছে।

 

ফার্সি নববর্ষ উপলক্ষে আজ (সোমবার) ইরানের রেডিও ও টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইউক্রেনের চলমান পরিস্থিতি এবং দেশটিকে সার্বিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাশ্চাত্যের শেষ মুহূর্তে সরে যাওয়ার ঘটনা সবাই দেখেছেন।  ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পাশ্চাত্যের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে যেসব বক্তব্য রাখছেন তা থেকেই প্রমাণ হয় এসব শক্তির ওপর নির্ভর করা যায় না।
 
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, পশ্চিমা শক্তিগুলো আফগানিস্তানেও একই কাজ করেছে। তারা ২০ বছর দেশটিকে দখল করে রেখে এটিকে বিপর্যয়ের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়েছে। আর যাবার সময় কি চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গেছে তা সে দৃশ্য বিশ্বের স্বাধীনচেতা জাতিগুলো দেখেছে।
 
ইউক্রেনে পাশ্চাত্যের বর্ণবাদী আচরণেরও সমালোচনা করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেন থামিয়ে শুধুমাত্র গায়ের রং কালো হওয়ার জন্য কৃষ্ণাঙ্গ যুবকদের নামিয়ে দেয়া হয়েছে।
 
 
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী তার ভাষণের অন্য অংশে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে আশাবাদী হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে বলেও তিনি সুসংবাদ দেন।
 
সর্বোচ্চ নেতা বিজ্ঞানের ব্যবহারের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, কৃষিকাজে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে, অর্থনীতির ওপর চাপ কমবে এবং দেশ সমৃদ্ধশালী হবে।
 
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, গত বছর আমি দেশের অর্থনীতিকে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত না করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম নিষেধাজ্ঞা চিরদিন বহাল থাকবে ধরে নিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত এক বছরে যেসব কাজ হয়েছে তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে।  
 
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, নতুন গৃহিত নীতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় বৈদেশিক বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব, আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে বড় বড় চুক্তি করা সম্ভব এবং তেল রপ্তানিও বৃদ্ধি করা সম্ভব।  তিনি বলেন, তবে এর অর্থ এই নয় যে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের চেষ্টা করা হবে না। সে চেষ্টাও অব্যাহত থাকবে। যারা এ বিষয়ে কাজ করছে আমি তাদের সাফল্য কামনা করছি।
 
ঐতিহ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ নেতা নতুন বছর শুরুর মুহূর্তে সংক্ষিপ্ত বাণী দেন। এরপর বছরের প্রথম দিন মাশহাদ শহরে ইমাম রেজা (আ.)-এর মাজার প্রাঙ্গণে তিনি জনগণকে উদ্দেশ করে বিস্তারিত ভাষণ প্রদান করেন। তবে করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে বিগত দুই বছরের মতো এ বছরও তিনি মাশহাদে ভাষণ দেননি বরং রেডিও টেলিভিশনের মাধ্যমে সরাসরি জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন।  iqna
captcha