পবিত্র কুরআনের ৪৮তম সূরাকে "ফাতাহ" বলা হয়। ২৯টি আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি পবিত্র কুরআনের ২৬তম পারায় অবস্থিত হয়েছে। ফাতাহ, যা একটি নাগরিক সূরা, ইসলামের নবীর কাছে নাযিল হওয়া একশত দ্বাদশ সূরা। এই মাদানী সূরাটি নাযিলের ক্রমানুসারে ১১২তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
এই সূরাটিকে "ফাতহ" বলা হচ্ছে কারণ সূরার শুরুতে ফাতহে মুবীন (সুস্পষ্ট বিজয়)-এর কথা বলা হয়েছে। হিজরী ৬ষ্ঠ সনে হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় যে বিজয় হয়েছিল। এই সন্ধি ছিল নবী (সা.) এবং মক্কার মুশরিকদের মধ্যে ১০ বছরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি। এই সন্ধির ফলে অন্যান্য মহান বিজয়; যেমন: হিজরির সপ্তম বর্ষে খাইবার বিজয়, হিজরির অষ্টম বর্ষে মক্কা বিজয় এবং এরই মধ্যে বিপুল সংখ্যক মুশরিক ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়। আর এগুলই হলো ফাতহে মুবীন (সুস্পষ্ট বিজয়), যার ফলে এই সূরাটি"ফাতাহ" নামে পরিচিত।
সূরা ফাতাহ-এর মূল বিষয়বস্তু হল মুসলমানদের বিজয়ের বার্তা এবং আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদের উপর যে অনুগ্রহ করেছেন, সেইসাথে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে ও দুনিয়া ও আখিরাতে সুসংবাদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পরকালে ঈমান, জিহাদ ও আন্তরিকতার সওয়াব লাভ করা এবং আল্লাহর পথে মুজাহিদদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করা, কাফের ও মুনাফিকদের সতর্ক করা এবং নবীর উচ্চ মর্যাদা অর্জন এবং ওহী ও রিসালাতের লক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
এই সূরাটি একটি সুস্পষ্ট বিজয়ের সুসংবাদ দিয়ে শুরু হয়েছে এবং ইসলামের নবী (সা.)-এর মক্কায় প্রবেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে।
অন্য অংশে মুনাফিকদের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে অংশগ্রহণ না করার জন্য তাদের ভিত্তিহীন অজুহাতের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে এবং মুনাফিকদের অযৌক্তিক দাবির কথা বলা হয়েছে।
অতঃপর সেই দলগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাদের যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই এবং সবশেষে একটি অংশে মাহান আল্লাহের পক্ষ থেকে ইসলামের নবী (সা.) কর্তৃক আনিত ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের বিশেষ গুণাবলী সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে।