তিনি ইকনার সঙ্গে ৩৯তম আন্তর্জাতিক ইসলামি ঐক্য সম্মেলনের ফাঁকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন:
“আমি পাকিস্তানের ইসলামি মাযহাব ইউনিয়নের প্রধান, যা ওয়ান-ওয়ে কমিশন নামে পরিচিত।”
মুহাম্মদ জুবায়ের ব্যাখ্যা করেন, “এটি একটি বেসরকারি সংগঠন, যা সব মাযহাবের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মূল লক্ষ্য হলো ইসলামি মাযহাবগুলোর আলেমদের একত্রিত করা।”
তিনি যোগ করেন, পাকিস্তানে তাকফিরি গোষ্ঠীগুলো জনগণের মাঝে প্রবেশের চেষ্টা করেছে এবং তাদের মতবাদ ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের আলেমরা কঠোরভাবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানে ইতিমধ্যে আরবি ও ফারসি থেকে বহু অ্যান্টি-তাকফিরি বই উর্দুতে অনুবাদ হয়েছে এবং তরুণদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা তাকফিরের বিপদ সম্পর্কে সচেতন হয়।
তিনি জানান, ইমাম খোমেইনির (রহ.) জীবদ্দশা থেকেই তিনি নিয়মিত ইরান যাতায়াত করেছেন। প্রথমবার ঐক্য সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা ছিল ১৯৮৭ সালে, যখন সৌদি আরবে হজ্জের সময় ইরানি হাজিদের হত্যাকাণ্ড ঘটে।
গাজা যুদ্ধ নিয়ে তিনি বলেন: “গাজা ও ফিলিস্তিনের যুদ্ধ সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের উদ্বিগ্ন করেছে। পাকিস্তানের জনগণও যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই সরকারকে সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছে এবং গাজার পক্ষে অবস্থান নিতে বলেছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের জনগণ প্রতি সপ্তাহে বিক্ষোভ করে গাজায় ইসরায়েলের মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
মুহাম্মদ জুবায়ের বলেন, “ইরান একমাত্র দেশ যে বাস্তবে ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিয়েছে। তারা বহু ত্যাগ স্বীকার করেছে এবং বহু শহীদ দিয়েছে। আমাদের দাবি হলো, অন্যান্য দেশগুলোকেও বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে ফিলিস্তিনকে সাহায্য করতে হবে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জায়োনিস্ট ষড়যন্ত্র মোকাবিলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো ইসলামি বিশ্বের ঐক্য। ইসরায়েলি দখলদারি শুধু ফিলিস্তিনে সীমিত নয়, তারা সমগ্র মুসলিম দেশগুলোর প্রতি লোলুপ দৃষ্টি রাখে। সুতরাং সব মুসলমানকে এই চরম অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন:“মুসলিম উম্মাহর মর্যাদা ও শক্তি ঐক্যের ওপর নির্ভরশীল। শত্রুরা তা জানে বলেই তারা ঐক্য ভঙ্গ করার চেষ্টা করে। যদি মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে তারা সমগ্র পৃথিবীতে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।”
শেষে তিনি সূরা আলে ইমরান (আয়াত ১০৩) উদ্ধৃত করেন:
“وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ...”
(তোমরা সবাই আল্লাহর রশি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো এবং বিচ্ছিন্ন হয়ো না... আল্লাহর নিয়ামতের কথা স্মরণ করো, যখন তোমরা একে অপরের শত্রু ছিলে, আল্লাহ তোমাদের অন্তরগুলোতে মেলবন্ধন সৃষ্টি করলেন এবং তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভাই ভাই হয়ে গেলে)।
তিনি বলেন, এ আয়াতে দু’বার নিয়ামত শব্দের পুনরাবৃত্তি হয়েছে, যা প্রমাণ করে মুসলমানদের ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্ব আল্লাহর দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মোহসেন হাদাদি
4306094#