ইরানের জাতীয় গৌরব— যুব সমাজের অর্জন
এই বক্তব্য তিনি দেন ক্রীড়া ও বিজ্ঞান খাতে সাফল্য অর্জনকারী শত শত তরুণ-তরুণীর উপস্থিতিতে। তিনি বলেন, “আপনারা ইরানের জাতীয় শক্তির প্রতীক। এমন সময়ে যখন শত্রুরা নরম যুদ্ধের মাধ্যমে জাতিকে হতাশ করতে চায়, আপনারা মাঠে ও গবেষণাগারে নিজের সক্ষমতা প্রদর্শন করে সবচেয়ে শক্তিশালী জবাব দিয়েছেন।”
তিনি যোগ করেন, “ইরানের তরুণরা হতাশ নয়, তারা আশার প্রতীক। কঠোর পরিশ্রম ও উচ্চ মনোবল নিয়ে তারা বিশ্বের শীর্ষে উঠতে সক্ষম।”
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের জবাব
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি সাম্প্রতিককালে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের মিথ্যা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন: “তিনি দখলকৃত ফিলিস্তিনে গিয়ে অর্থহীন কথা বলেছেন, যেন হতাশ ইহুদিবাদীদের সাহস জোগাতে চান। কিন্তু যদি আপনার এত শক্তি থাকে, তাহলে আমেরিকার সেই লাখো মানুষকে শান্ত করুন যারা আপনাকে ধিক্কার জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে।”
তিনি গাজায় ১২ দিনের যুদ্ধে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের “অবিশ্বাস্য প্রতিরোধ” ও “ইসরাইলকে দেওয়া শক্তিশালী জবাব” স্মরণ করিয়ে বলেন, “ইসরাইল কল্পনাও করেনি যে ইরানি প্রযুক্তিতে নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র তাদের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে।”
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ইরানের অগ্রগতি
রহবরুল মুআজ্জাম বলেন, “ইরানের তরুণ বিজ্ঞানীরা ন্যানো, লেজার, পারমাণবিক, সামরিক ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষ দশ দেশের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি একটি গবেষণা কেন্দ্র এমন একটি রোগের চিকিৎসা আবিষ্কার করেছে, যা এতদিন পর্যন্ত অনারোগ্য ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আমেরিকা ও তার মিত্ররা ইরানের এই অগ্রগতি বন্ধ করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে— কিন্তু তারা ব্যর্থ হবে, কারণ আমরা আমাদের সক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস হারাব না।”
গাজা ও মানবাধিকার প্রসঙ্গে বক্তব্য
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি বলেন, “আমেরিকা দাবি করে তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে, অথচ গাজায় ২০ হাজার শিশু ও নবজাতক নিহত হয়েছে। তারা কি সন্ত্রাসী ছিল? প্রকৃত সন্ত্রাসী তো আমেরিকা, যারা আইএস তৈরি করেছে এবং আজও তা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে।”
তিনি আরও বলেন, “গাজায় ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা এবং ১২ দিনের যুদ্ধে এক হাজারেরও বেশি ইরানির শাহাদাত প্রমাণ করে আমেরিকা ও ইসরাইলের সন্ত্রাসী চরিত্র।”
“আমেরিকা ইরানের বন্ধু নয়”
সর্বোচ্চ নেতা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কথিত “ইরানিদের প্রতি সহানুভূতি” মন্তব্যকে ভণ্ডামী বলে অভিহিত করে বলেন, “আপনাদের নিষেধাজ্ঞা সরাসরি ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে, সুতরাং আপনারা শত্রু, বন্ধু নন।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা দাবি করেন যে আলোচনার জন্য প্রস্তুত, কিন্তু যদি আলোচনার অর্থ হয় জবরদস্তি ও শর্ত আরোপ, তাহলে সেটা আলোচনা নয়, সেটা দমননীতি। ইরানি জাতি কখনো জুলুমের কাছে নত হবে না।”
আমেরিকার উপস্থিতি— অঞ্চলের অশান্তির মূল কারণ
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি বলেন, “আমেরিকা দাবি করে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ও মৃত্যু চলছে; অথচ এই যুদ্ধগুলোর মূল প্ররোচনাকারী তারাই। অসংখ্য মার্কিন ঘাঁটি কেন এখানে? এই অঞ্চল এখানকার জনগণের, আমেরিকার নয়।”
তিনি শেষ করেন এই বলে, “আমেরিকার ঔদ্ধত্য হয়তো কিছু দুর্বল রাষ্ট্রকে প্রভাবিত করে, কিন্তু আল্লাহর সাহায্যে তা কখনোই ইরানি জাতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে না।” 4311819#