
অবিচার, বৈষম্য ও নিপীড়নে ভরা এই পৃথিবীতে, মানুষ মুক্তি এবং শান্তির পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে। ইমাম মাহদি (আ.)-এর আবির্ভাবের প্রত্যাশা বিশ্বাসীদের জন্য আশার এক আলোক-রেখা তুলে ধরে। এই প্রত্যাশা কোন দূরবর্তী স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা নয়; বরং এটি একটি গভীর এবং বদ্ধমূল বিশ্বাস।
আশা থাকা মানে বিশ্বাস করা যে আজকের কষ্ট ও সমস্যা সত্ত্বেও, একটি উজ্জ্বল আগামীকাল আসছে। এমন একটি আগামীকাল যেখানে, প্রতিশ্রুত ত্রাণকর্তার আবির্ভাবের সাথে সাথে, অন্ধকার ও নিপীড়ক পৃথিবী ন্যায়বিচার, দয়া এবং শান্তিতে ভরা একটি পৃথিবীতে রূপান্তরিত হবে। এই ধরনের আশা মানুষের চেতনাকে জীবন্ত রাখে এবং হৃদয়ে এগিয়ে যাওয়ার ও সক্রিয় প্রচেষ্টা চালানোর প্রেরণা জাগিয়ে তোলে।
ইমাম মাহদির আবির্ভাবের অর্থ হলো জুলুম, দুর্নীতি ও অবিচারের অবসান এবং এমন এক যুগের সূচনা যেখানে বিশ্বজুড়ে সত্য ও খোদায়ি ন্যায়বিচার হবে প্রতিষ্ঠিত। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, ন্যায়বিচার কেবল সম্পদের সমান বন্টন নয়; এর মধ্যে আধ্যাত্মিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ন্যায়বিচারও অন্তর্ভুক্ত। মাহদাভি সরকারে কেউ নির্যাতিত হয় না এবং সকল মানুষের অধিকারকে সম্মান করা হয়।
অনেক বর্ণনায় এসেছে যে যুগের ইমামের আবির্ভাবের যুগ হল এমন একটি যুগ যখন বঞ্চিতরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে, অত্যাচারীরা সরে যাবে এবং একটি মানবিক, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক সমাজ গড়ে উঠবে।
ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে ইমাম মাহদি-আ. তথা যুগের ইমামের পুনরুত্থানে বিশ্বাস একজন ব্যক্তিকে আরও ধৈর্যশীল, প্রতিরোধকামি ও দৃঢ়চেতা এবং নৈতিকভাবে ন্যায়পরায়ণ করে তোলে। যে ব্যক্তি ইমাম মাহদির আবির্ভাবের অপেক্ষায় থাকে সে ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে তাদের জীবন গড়ে তোলার চেষ্টা করে এবং জুলুম ও দুর্নীতি এড়িয়ে চলে।
সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই প্রত্যাশা সংস্কারবাদী ও ন্যায়বিচারকামী আন্দোলনগুলোকে অনুপ্রাণিত করে। যারা ইমাম মাহদির আবির্ভাবের প্রতি বিশ্বাস রাখে তারা দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করাকে নিজেদেরকে দায়িত্ব বলে মনে করে এবং একটি পবিত্র ও ন্যায়বিচারকামী সমাজ গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালায়। #পার্স টুডে