
ফিলিস্তিনের ধর্ম ও ওয়াকফ মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে জানায়, গত মাসে ইসরায়েলি দখলদার ও বসতকারীরা একাধিকবার মসজিদে হামলা চালিয়েছে এবং খালিলের ইবরাহিম মসজিদে ৯৬ বার আজান প্রচার বন্ধ করেছে।
এই তথ্যগুলো মন্ত্রণালয়ের মাসিক প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর ধর্মীয় স্থানগুলোর বিরুদ্ধে সংঘটিত লঙ্ঘনসমূহের বিবরণ দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েলের চরম ডানপন্থী ও উগ্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতমার বেন গেভির এবং সংসদের কয়েকজন সদস্য ২২ অক্টোবর “সিমখাত তোরা” উৎসবের উপলক্ষে আল-আকসা মসজিদের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে।
অন্যদিকে, অক্টোবর মাসে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ইবরাহিম মসজিদে আজান প্রচার ৯৬ বার বন্ধ করেছে, যা মসজিদটির সময় ও স্থানভিত্তিক বিভাজন চাপিয়ে দেওয়ার এক প্রচেষ্টা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তারা একাধিকবার মসজিদ বন্ধও করে দেয়।
প্রতিবেদন আরও জানায়, দখলদার বাহিনী ও বসতকারীরা মসজিদের ভেতরে উসকানিমূলক কার্যক্রম চালিয়েছে, ইসরায়েলি পতাকা উত্তোলন করেছে, তোরাহ স্ক্রল, কাঠের পার্টিশন, প্লাস্টিকের চেয়ার, তাঁবু, লাউডস্পিকার ও বাদ্যযন্ত্র স্থাপন করেছে।
ফিলিস্তিনি ওয়াকফ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, দখলদার কর্তৃপক্ষ এখনো প্রতিদিন ইবরাহিম মসজিদের প্রধান ফটক (বাবুস সুক) বন্ধ রাখে এবং ২০২৫ সালের শুরু থেকে পূর্ব দরজাটিও বন্ধ করে জানালাগুলো প্লাস্টিকের পর্দা দিয়ে ঢেকে রেখেছে।
ইবরাহিম মসজিদটি খালিল (হেবরন) শহরের পুরনো অংশে অবস্থিত, যা ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে। এখানে প্রায় ৪০০ জন বসতকারী ইহুদি বাস করে, যাদের নিরাপত্তায় প্রায় ১,৫০০ ইসরায়েলি সেনা মোতায়েন রয়েছে।
১৯৯৪ সালে এক ইহুদি বসতকারী কর্তৃক সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ২৯ জন ফিলিস্তিনি নামাজরত অবস্থায় শহীদ হন, এরপর থেকেই ইসরায়েল মসজিদটিকে বিভক্ত করে— ৬৩ শতাংশ অংশ ইহুদিদের এবং ৩৭ শতাংশ অংশ মুসলমানদের জন্য বরাদ্দ করে।
ইসরায়েলের একতরফা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইবরাহিম মসজিদ প্রতি বছর ১০ দিন ইহুদি ধর্মীয় উৎসবের সময় মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে, একইভাবে ইসলামি উৎসবের সময় ১০ দিন ইহুদিদের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
তবে ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে, মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবেও মসজিদটি সম্পূর্ণরূপে খোলা হয়নি। 4315113#