IQNA

কোরআন যখন আমেরিকার বহুল পঠিত গ্রন্থ

0:03 - December 04, 2022
সংবাদ: 3472932
তেহরান (ইকনা): উত্তর আমেরিকায় ইসলামের আগমন ঘটেছিল কয়েক শ বছর আগে। যখন আফ্রিকার অধিবাসীদের দাস হিসেবে ধরে আনা হতো। তাদের মধ্যে বহুসংখ্যক হতভাগ্য মুসলিমও ছিল। খ্রিষ্টীয় ১৭ শতকের শেষভাগ থেকে কোরআনের ইংরেজি অনুবাদ প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদে বিশ্বাসী ইংল্যান্ড ও তার উপনিবেশগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এই সময় কোরআন পাঠকদের মধ্যে ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন।
নিকট অতীতে টমাস জেফারসনের ব্যক্তিগত কোরআনের অনুলিপি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ২০১৯ সালে। যখন প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে রাশিদা তালিব মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হন এবং কোরআনের অনুলিপিটি ছুঁয়ে শপথ করার ঘোষণা দেন। তবে তাঁর আগে ২০০৭ সালে প্রথম মুসলিম কংগ্রেসম্যান কেইথ ইলিসন কোরআনের পুরনো এই অনুলিপিতে হাত রেখে শপথ গ্রহণ করেন। শপথ গ্রহণে কোরআনের এই অনুলিপির ব্যবহার মানুষের সামনে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানের সুদীর্ঘ ইতিহাসকে আবারও তুলে ধরে।
 
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এবং ‘টমাস জেফারসন’স কোরআন : ইসলাম অ্যান্ড দ্য ফাউন্ডারস’ গ্রন্থের লেখক ডেনিস এ স্কেলবার্গ বলেন, ইংল্যান্ড ও উত্তর আমেরিকার প্রোটেস্ট্যান্টের মধ্যে কোরআন পাঠ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল প্রধানত কৌতূহল থেকে। এ ছাড়া মানুষ এটাকে আইনের বই মনে করত এবং মুসলমানদের বোঝার উপায় মনে করত। বিশেষত যাদের সঙ্গে উসমানীয় সাম্রাজ্য ও উত্তর আফ্রিকার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন কোরআনের অনুলিপিটি ১৭৬৫ সালে ক্রয় করেন। তখন তিনি ছিলেন আইনের ছাত্র। সম্ভবত তিনি উসমানীয় আইন বুঝতে তা ক্রয় করেছিলেন। আবার সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় উপাসনার স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষার মানসিকতা থেকেও এটা হতে পারে। যেমন তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘উপাসনার অধিকার আছে ইহুদি, নাস্তিক, খ্রিস্টান, মোহামেডান (মুসলিম), হিন্দু ও প্রত্যেক অবিশ্বাসীর। ’
 
এই ধর্মীয় সহনশীলতা জেফারসনের জন্য অনেকটাই তাত্ত্বিক ছিল। তিনিসহ ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত অনেকের এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না যে, উসমানীয়রা নিয়ন্ত্রণ করে না এমন অঞ্চলে ইসলাম কিভাবে বিস্তার লাভ করেছিল। অর্থাৎ তারা হয়তো জানত না যে, তারা যে ধর্মবিশ্বাস অধ্যয়ন করছে উত্তর আফ্রিকা থেকে দাস হিসেবে ধরে আনা বহু মানুষের ধর্মবিশ্বাস সেটাই ছিল।
সূত্র : হিস্টোরি ডটকম
captcha