
কিন্তু বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, এই শান্তি স্থায়ী করতে হলে ট্রাম্পকে সেই ব্যক্তির ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে, যার সহযোগিতা ট্রাম্পের পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপগুলোতে অপরিহার্য। আর তিনি হলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
বিল ক্লিনটন থেকে জো বাইডেন পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টরা নেতানিয়াহুর সঙ্গে কাজ করাকে কঠিন বলে মনে করেছেন। এমনকি ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারাও অনেক সময় বিরক্ত হয়েছেন ইসরায়েলের কিছু সামরিক হামলায়, যা তারা মনে করেন মার্কিন নীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
তবে চলতি মাসে ট্রাম্প এমন কিছু করতে পেরেছেন যা অনেকেই অসম্ভব ভেবেছিলেন — তিনি নেতানিয়াহুকে তার বিস্তৃত শান্তি পরিকল্পনার কাঠামো মেনে নিতে রাজি করিয়েছেন এবং একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোকে প্ররোচিত করেছেন যাতে তারা হামাসকে সব ইসরায়েলি বন্দি ফিরিয়ে দিতে রাজি করায়, যা ছিল যুদ্ধের মূল হাতিয়ার।
তবে এখান থেকেই আসল চ্যালেঞ্জ শুরু হতে পারে।
ইসরায়েল ও হামাস এখনও ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার অনেক বিষয়ে তীব্রভাবে বিভক্ত। আগামী বছরের ইসরায়েলি নির্বাচনের প্রেক্ষিতে নেতানিয়াহুর অবস্থানও পাল্টে যেতে পারে, কারণ তিনি তার ডানপন্থী জোট ধরে রাখার জন্য নতুন রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ করতে পারেন।
ইসরায়েলি থিংক ট্যাঙ্ক ‘মিতভিম’-এর সভাপতি নিমরোদ গোরেন বলেন, ‘আমরা এমন এক রাজনৈতিক বছরে প্রবেশ করছি, যেখানে সবকিছুই নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। নেতানিয়াহুর অগ্রাধিকার পরিবর্তিত হতে পারে — আন্তর্জাতিক চাপ মেনে নেওয়া থেকে সরে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা নিশ্চিত করাই হতে পারে তার প্রধান লক্ষ্য।
’
কূটনীতিক ও বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার শক্তি একই সঙ্গে তার দুর্বলতাও। চুক্তির মূল নথিতে অনেক বিষয় অস্পষ্টভাবে রাখা হয়েছে — এবং দুই পক্ষই শর্তগুলোর সূক্ষ্ম বিস্তারিত বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সম্মতি দেয়নি। এই অস্পষ্টতাই উভয়পক্ষকে চুক্তিতে রাজি করাতে সাহায্য করেছে, কিন্তু এর মানে হলো সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক কাজগুলো এখনো বাকি।
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার সম্ভাব্য জটিল অংশগুলোর একটি হলো হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে তাদের কোনো ভূমিকা না থাকা। যদিও হামাস সামগ্রিকভাবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা মেনে নিয়েছে, তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এসব শর্তের কোনো উল্লেখ ছিল না।
বরং হামাস নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা শাসনে তারা নিজেদের ভূমিকা দেখতে চান।
সূত্র : রয়টার্স।