
ইকনা (IQNA)-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, আল-মানার টেলিভিশন জানায়, মঙ্গলবার (২৯ মেহর) তেহরানে আয়োজিত “গিনা ও মোসিকি (সঙ্গীত ও সংগীতধর্মী বিষয়) — ইসলামী বিপ্লবের নেতার দৃষ্টিকোণ থেকে” গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাঈম কাসেম বলেন, “আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের লেবানন ও গোটা অঞ্চলে হস্তক্ষেপ অত্যন্ত ক্ষতিকর; এটি গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমেরিকার এই হস্তক্ষেপ প্রমাণ করছে যে তারা নিজেদের সম্প্রসারণবাদী প্রকল্পের জন্য গণহত্যা ও হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করছে। নেটানিয়াহু ‘গ্রেটার ইসরায়েল’-এর যে ধারণা দিচ্ছে, সেটি আসলে ‘গ্রেটার আমেরিকা’-র স্বার্থে; যেমনটি আমরা ট্রাম্পের বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডে দেখেছি।”
হিজবুল্লাহ মহাসচিব জোর দিয়ে বলেন, “লেবানন কখনো ইসরায়েলের দাবি মেনে নেবে না, আমেরিকাও তা করতে পারবে না। কারণ এই জাতির ভেতর এমন মানুষ রয়েছে যারা আত্মত্যাগে প্রস্তুত এবং মর্যাদাবানভাবে বেঁচে থাকতে চায়। আমরা এখন এমন এক সংগ্রামের পর্যায়ে আছি, যেখানে কষ্ট ও আশা দুটোই রয়েছে — কারণ ইসরায়েল এখনও তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ।”
তিনি আরও বলেন, “লেবাননকে স্বাধীন, মর্যাদাবান, শক্তিশালী ও সক্ষম থাকতে হবে। ইসরায়েল আসলে শান্তি বা সমঝোতা চায় না। যারা মনে করে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করলেই সমস্যা মিটে যাবে, তারা গুরুতর ভুল করছে;
কারণ প্রতিরোধের অস্ত্রই লেবাননের শক্তির অংশ।”
নাঈম কাসেম মন্তব্য করেন,“নতুন কিছু ঘটেনি; যুক্তরাষ্ট্র এখন রাজনীতির মাধ্যমে ইসরায়েলের ব্যর্থ সামরিক লক্ষ্য পূরণ করতে চায়। আমাদের হুমকি দেওয়া অর্থহীন — যদি তারা সমঝোতা কার্যকর করে, লেবাননও তা করবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের চাপ, সময়ক্ষেপণ ও কূটচাল সবই অর্থহীন।”
তিনি বলেন, “নেটানিয়াহু হয়তো গর্ব করে বলতে পারে কোথায় কোথায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে,
কিন্তু সে কখনোই বলতে পারবে না যে ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীল।”
আমেরিকার প্রশাসনের উদ্দেশে হিজবুল্লাহ নেতা বলেন, “লেবাননের শক্তি কেড়ে নিয়ে তাকে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’-এর অংশে পরিণত করার চেষ্টা বন্ধ করুন। লেবাননের স্থিতিশীলতা কেবল ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই সম্ভব। ট্রাম্পের শারম আল-শাইখে (মিসর) নেওয়া ‘শান্তির ভঙ্গি’ আসলে ভণ্ডামি।”
তিনি লেবাননের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান— “আপনারা দেশের সার্বভৌমত্বের রক্ষক; সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ নিন। পুনর্গঠনের দায়িত্বও আপনাদের; তাই বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এ সময় তিনি লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর করিম সাঈদ ও বিচারমন্ত্রী আদেল নাসর-এর সমালোচনা করে বলেন, “তারা যেন আমেরিকার কর্মচারী হয়ে না ওঠেন। ব্যাংকিং ও বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের সংকটে ফেলবেন না। লেবানন কি আমেরিকার নিয়ন্ত্রিত কোনো কারাগার, যেখানে নিজের নাগরিকরাই বন্দি?”
শেষে তিনি বলেন, “আমরা কখনোই মেনে নেব না যে লেবাননকে আমেরিকার অধীনস্থ একটি কারাগারে পরিণত করা হোক। সরকারি কর্মকর্তারা যেন লেবাননের সরকার ও জনগণের স্বার্থেই কাজ করেন, অন্য কোনো শক্তির জন্য নয়।” 4312101#