IQNA

কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ব্যক্তিদের চরিত্র – ৮

ইদরীস (আ.); একজন নবী যিনি ছিলেন বিজ্ঞানের উৎস

0:05 - September 20, 2022
সংবাদ: 3472498
তেহরান (ইকনা): প্রথম ব্যক্তি যিনি ক্যালিগ্রাফি করেছিলেন এবং প্রথম ব্যক্তি যিনি কলম দিয়ে লিখেছেন তিনি ছিলেন হযরত ইদরীস (আ.)। তিনি মহান আল্লাহর প্রেরিত একজন নবী ছিলেন। তিনি একজন পণ্ডিত, শিক্ষক এবং চিন্তাবিদ ছিলেন, তিনি আল্লাহর কাছ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের কারণে বহু বিজ্ঞানের স্রষ্টা হিসাবে পরিচিত।

হযরত ইদরীস (আ.) সেই ২৬ জন নবীর একজন যাদের নাম আল্লাহ পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন। হযরত আদম (আ.) হতে তার ব্যবধান মাত্র ৫ পুরুষ। তার পিতার নাম “ইয়ারজ বিন মাহালিল”। তাকে হযরত নূহ (আ.)-এর পূর্বপুরুষ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
ঐতিহাসিক বই অনুসারে, কাবিলের সন্তান ও বংশধররা ব্যাবিলনে বাস করত, যারা ছিল মুশরিক ও মূর্তিপূজারী এবং অশ্লীল কাজে লিপ্ত ছিল। ব্যাবিলনের অধিকাংশ মানুষ হযরত ইদরীস (আ.)-কে অনুসরণ না করার কারণে তিনি তাঁর প্রতি ঈমান আনায়নকারীদের সঙ্গে নিয়ে অন্য দেশে হিজরত করার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাবিলন ত্যাগ করার পর তারা নীল নদ ও মিশর ভূমিতে চলে যান। মানুষকে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি, হযরত ইদরীস (আ.) তাদেরকে নতুন জায়গায় নগর পরিকল্পনা, সভ্যতার রাজনীতি এবং তার নিয়ম-কানুন শিখেছিলেন।
হযরত ইদরীস (আ.) অতি চিন্তাশীল ছিল এবং হাঁটার সময় মাথা নিচু করে হাঁটতেন। তিনি অনেক বিজ্ঞান ও গ্রন্থের স্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর কাজ ছিল শিক্ষকতা, তিনি মানুষকে জ্যোতির্বিদ্যা এবং পাটিগণিত শেখাতেন, তিনি গ্রীস সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিজ্ঞান প্রকাশ করেছিলেন এবং গ্রীসের ঋষিরা তাঁর জ্ঞান থেকে উপকৃত হয়েছেন।গ্রীকদের মধ্যে, তিনি টারসমিন ওয়ার্মস নামে পরিচিত লাভ করেছেন এবং আরবরা তাকে হার্মিস এবং "আল মুছাল্লাছ বিননেয়মাত”( আশীর্বাদকৃত ত্রিভুজ) বলে ডাকে। হার্মিস শব্দের অর্থ বুধ গ্রহ, এবং "আল মুছাল্লাছ বিননেয়মাত”-এর অর্থ হল "প্রজ্ঞা, সরকার এবং নবুয়ত", অর্থাৎ হযরত ইদরীসকে (আ.) মহান আল্লাহ তিনটি মহান নিয়ামত দান করেছেন।
একটি রেওয়ায়েতে, ইসলামের নবী (সা.) বলেছেন: "প্রথম ব্যক্তি যিনি কলম দিয়ে লিখেছেন তিনি হলেন ইদরীস।"
এছাড়াও তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সেলাই কাজ শুরু করেন ও কাপড় সেলাই করেন। তার আগে মানুষ পশুর চামড়া পরত।
পবিত্র কুরআনে হযরত ইদরীস (আ.)-এর কথা দু’বার উল্লেখ করা হয়েছে (সূরা আম্বিয়া’র ৮৫ নম্বর আয়াতে এবং সূরা মারইয়ামের ৫৬ নম্বর আয়াত), যিনি একজন আন্তরিক, ধৈর্যশীল, ধার্মিক এবং উচ্চ মর্যাদার নবী হিসাবে পরিচিত লাভ করেছেন।
হযরত ইদরীস (আ.)-এর বয়স বা কর্মজীবনের সমাপ্তি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কিছু বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, হযরত ইদরীস (আ.) তার বিশেষ সঙ্গীদের সাথে আল্লাহর ইবাদত শুরু করেন এবং ইবাদতরত অবস্থায় মহান আল্লাহ হযরত ইদরীস (আ.)-এর রুহকে উচ্চ স্থানে নিয়ে যান।
কেউ কেউ বলেন, হযরত ইদরীস (আ.) মিশরের ‘মানাফ’ নামক অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেছেন, আবার কেউ বলেন তিনি ব্যাবিলনে জন্মগ্রহণ করেছেন। হযরত ইদরীস (আ.) বড় হওয়ার পর আল্লাহ তাকে নবী হিসেবে মনোনীত করেন। তাওরাতে তাকে «اخنوخ» "আখনুখ" বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট খবর
captcha