জবাবে এক রোহিঙ্গা বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, পুলিশ, মগ সম্প্রদায়ের যুবকেরা রোহিঙ্গাদের খুন-জখম করেছে। ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। মেয়েদের ধর্ষণ করেছে। মালামাল লুট করেছে। তাই রোহিঙ্গারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।এ সময় আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, গুলি, হত্যা, ধর্ষণসহ দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে ধরেন।
এ সময় মিয়ানমার তদন্ত কমিশনের প্রধান জ্য মিন্ট পে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের অভিযোগ সত্য নয়। ঘটনার পর এই তদন্ত কমিশনের সদস্যরা রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকা সফর করেছে। যেখান থেকে তোমরা পালিয়ে এসেছ। সেখানে এমনকি হয়েছে যে তোমরা ঘরবাড়ি ফেলে বাংলাদেশ পালিয়ে এসেছ?এ সময় মো. রফিক নামে আরেক রোহিঙ্গা তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, আপনি ঠিক বলছেন না। ৯ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যের তিনটি পুলিশ ফাঁড়িতে সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানকার সেনাবাহিনী সন্ত্রাস দমন অভিযানের নামে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ দমন-পীড়ন চালাতে থাকে। এ সময় সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন অসংখ্য রোহিঙ্গা নারী। দমন-পীড়ন সহ্য করতে না পেরেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ পালিয়ে আসেন।রোহিঙ্গা নেতা আবু ছিদ্দিক বলেন, ছোট ছোট শিশু কী অন্যায় করেছে? তাদের কেন আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে? কেন ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া হলো? গৃহহীন রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে জন্মভূমি ত্যাগ করে বাংলাদেশ পালিয়ে এসেছেন।
একই অভিযোগ তুলে ধরেন এই শিবিরে আশ্রয় নেওয়া আরও কয়েক জন রোহিঙ্গা। তারা বলেন, মিয়ানমার সরকার নাগরিকত্ব ও শান্তিতে বসবাসের সুযোগ নিশ্চিত করলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফিরে যাবে।
অবশ্য মিয়ানমারের তদন্ত কমিশনের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের এসব অভিযোগ কিছুতেই মানতে রাজি হন নি। তারা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন পাল্টা প্রশ্নেরও উত্তর দেননি। এ কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকেই বলেছেন, মিয়ানমারের এই তদন্ত কমিশনের প্রতি তাদের কোনো আস্থা নেই। মিয়ানমারে ফিরে তদন্ত কমিশন মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সূত্র: parstoday