ব্রিগেডিয়ার ফখরুল আহসান আরও বলেন, দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে অপারেশন টোয়ালাইটের প্রথম পর্বটি ছিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। কমান্ডোরা জীবনবাজি রেখে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে ২৫ মার্চ দুপুরের মধ্যে নারী-শিশুসহ ওই ভবনের বাসিন্দা ৭৮ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করে। পুরো ভবনের পাঁচতলা থেকে দোতলা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ অত্যন্ত সন্তর্পনে করা হয়। নিচতলার উদ্ধার অভিযান ছিলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তবে কমান্ডো সদস্যরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে অভিনব পন্থা অবলম্বন করে সব বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে আনেন।
তিনি বলেন, অভিযানের দ্বিতীয় পর্বে জঙ্গিদের নির্মূলের কাজ শুরু হয়। এ পর্বে সেনাবাহিনীর কমান্ডোদের পাশাপাশি স্নাইপার দলসহ বিশেষায়িত অনেক সদস্য নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেন। তিন দিন বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে সোমবার বিকেলের মধ্যেই চার জঙ্গিকে নির্মূল করা হয়।
তিনি বলেন, নিহত চার জঙ্গির মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে এক পুরুষ ও এক নারীর লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, "দুঃসাহসিক অভিযানের জন্য আমরা সকলেই গর্বিত। আপনারও গর্ববোধ করতে পারেন। দেশবাসীর দোয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই খুব সুন্দর, সফলভাবে অভিযানটা চলেছে।”
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্রিগেডিয়ার ফখরুল আহসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাতেই সেনাবাহিনী এই অভিযানে অংশ নেয়।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে শিববাড়ি পাঠানপাড়ার ওই ভবন ঘিরে ফেলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সোয়াট এবং সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন। শনিবার সকালে শুরু হয় চূড়ান্ত অভিযান। শুরুতে সোয়াট এ অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন স্প্রিং রেইন’। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পিছু হটে বলে সেনা কর্মকর্তারা জানান।
প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরুল হাসানের নেতৃত্বে সেনাঅভিযানের নাম বদলে হয় ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’।
সেনা অভিযান শুরুর পর ব্যাপক গোলাগুলির মধ্যে শনিবারই ওই ভবন থেকে ৭৮ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই অভিযানের মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় আতিয়া মহল থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে এক জায়গায় দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হন।