
শাবিস্তানের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِيْ خَلَقَكُمْ مِّنْ نَّفْسٍ وَّاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيراً وََّنِسَاءً হে মানব! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতেই সৃষ্টি করেছেন ও যিনি তা হতে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তাদের দু’জন হতে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন।(সূরা নিসা-১)
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ وَّأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوْباً وَّقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوْا ‘‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ এবং নারী থেকে। তারপর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার..। (সূরা হুজুরাত-১৩)। আর এভাবেই মানুষের সামাজিক জীবনের যাত্রা শুরু হয়। মানুষ সকল যুগ ও কালে কোন না কোনভাবে সামাজিক জীবন যাপন করেছে। প্রাচীন কাল থেকেই পরিবার সামাজিক জীবনের প্রথম ক্ষেত্র বা স্তর হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
মানুষের সার্বিক কল্যাণে পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিত পরিবার গঠনের জন্য ইসলাম পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ জীবন বিধানের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে।
ইসলাম পরিবার গঠনে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিয়ের নির্দেশ প্রদান করেছে। মহান আল্লাহ বলেন, وَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ تُقْسِطُواْ فِي الْيَتَامَى فَانْكِحُواْ مَا طَابَ لَكُمْ مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَى وَثُلاَثَ وَرُبَاعَ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ تَعْدِلُواْ فَوَاحِدَةً ‘‘তোমরা যদি আশংকা কর যে, এতিম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করবে নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের ভাল লাগে, দুই, তিন অথবা চার; আর যদি আশংকা কর যে, সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকে... (সূরা নিসা- ৩)
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الَّذِيْنَ أُوتُواْ الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ إِذَا آتَيْتُمُوْهُنَّ أُجُوْرَهُنَّ مُحْصِنِيْنَ غَيْرَ مُسَافِحِيْنَ وَلاَ مُتَّخِذِيْ أَخْدَانٍ ‘‘মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হল যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্য ব্যভিচার অথবা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণের জন্য নয়। (সূরা মায়িদা- ৫)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: হে যুব সমাজ! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে। কারণ তা দৃষ্টিকে সংবরণকারী এবং লজ্জাস্থানকে সংরক্ষণকারী। আর যে সক্ষম নয় তার সিয়াম পালন করা উচিত। কারণ তা তার জন্য কামস্পৃহা দমনকারী। তিনি আরো বলেন: বিয়ে করা আমার সুন্নাত। সুতরাং যে আমার সুন্নাত বর্জন করবে সে আমার দলভুক্ত নয়।
শুধু তাই নয়, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিয়েকে ঈমানের অর্ধেক গণ্য করে বলেন, إذا تزوج العبد؛ فقد استكمل نصف الدين، فليتق الله فى النصف الباقى. ‘‘যখন কোন বান্দা বিয়ে করে তখন সে অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ করে। কাজেই অবশিষ্ট অর্ধেকের ব্যাপারে সে আল্লাহকে ভয় করুক।
পরিকল্পিত পরিবারে সন্তান আগমনে নতুন দায়দায়িত্ব, চিন্তা-চেতনা ও কর্তব্যবোধ স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মানসিকতার পরিবর্তন সাধন করে দেয়। সুস্থ, সুন্দর ও পরিকল্পিত দাম্পত্য সম্পর্ক নির্মিত হওয়ার মাধ্যমেই পরিবারে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করতে পারে।
এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে: তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে, যারা উদাসীন হবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। (মুনাফিকুন -৯)