IQNA

অমুসলিমদের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে ইসলামিক অর্থব্যবস্থা

16:36 - December 22, 2017
সংবাদ: 2604613
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ইসলামিক অর্থনীতি ঐতিহ্যগতভাবেই আধিপত্য বিস্তার করেছে। এখন বাকি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশগুলোই ইসলামিক অর্থব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছেন।

 

বার্তা সংস্থা ইকনা: ডেয়ালগিক ডেটা অনুযায়ী, আরো সুদৃঢ় বাজার পরিস্থিতি এবং একটি উন্নত নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার উপলব্ধি দ্বারা উদ্দীপিত নন-মুসলিম দেশসমূহের ইসলামি ঋণ প্রদান গত তিন বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে নতুন উচ্চতায় আরোহণ করেছে।

ইসলামিক অর্থনৈতিক পণ্য শরিয়া অথবা ইসলামি আইন মেনে চলে এবং ঝুঁকি ও মুনাফা-বণ্টন নীতির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। শরিয়া আইনে ঋণের উপর সুদ উপার্জন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এটি মদ, শুয়োরের মাংস, পর্নোগ্রাফি বা জুয়ার সঙ্গে সম্পর্কে আর্থিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করেছে।

ডেয়ালগিক ডেটা অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বাইরে নন-মুসলিম দেশগুলোর সরকারি ‘সুকুক’ বা ইসলামিক বন্ডের মূল্য ২.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যেটি ২০১৬ সালের চেয়ে ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং ২০১৫ সালে রেকর্ডকৃত দ্বিগুনের চেয়েও ১ বিলিয়ন ডলার বেশি।

গ্লোবাল ব্যাংকিংয়ের দৃষ্টিকোন থেকে বাকি বিশ্বের জন্য অর্থায়নের ক্রমবর্ধমান উৎস হিসেবে ইসলামিক ফাইন্যান্সের রূপান্তর মূলত ঋণগ্রহীতার তালিকা থেকে সহায়তা প্রাপ্ত হয়েছে; যারা সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে ইসলামিক বন্ড বিক্রি করেছে।

এই তালিকায় প্রথম দিকের নন-মুসলিম প্রতিযোগীদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিঙ্গাপুর সরকার। সিঙ্গাপুরকে অনুসরণ করে পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য, লাক্সেমবার্গ এবং হংকং ২০১৪ সালে তাদের প্রথম সুকুক বা ইসলামিক বন্ড ইস্যু করে।

সম্প্রতি আফ্রিকার দেশগুলোতেও এই ব্যবস্থা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। তাদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া এবং আইভরি কোস্টে আইন এবং কর ব্যবস্থায় পরিবর্তন করা হয়েছে; যেটি ঋণগ্রহীতাদের জন্য ইসলামিক বন্ড ইস্যুকরণ সহজ করেছে।

ইসলামিক বন্ড বিক্রির দিক থেকে বৈশ্বিক কোম্পানিগুলোও পিছনে নেই। মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি ‘গোল্ডম্যান স্যাচ’ এবং জেনারেল ইলেকট্রিকসের ‘জি ই ক্যাপিটাল’ গত কয়েক বছরে ইসলামিক বন্ড বিক্রি করছে।

কান্ট্রি গার্ডেন এবং বেইজিং এন্টারপ্রাইজেস ওয়াটার গ্রুপের মতো চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোও যথাক্রমে ২০১৫ ও ২২১৭ সালে মালয়েশিয়ার অধীনস্থ সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ইসলামিক বন্ড ইস্যু করেছে। কোম্পানিগুলো তাদের আয়সমূহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলোর জন্য ব্যবহার করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিশ্বব্যাপী আর্থিক সঙ্কট সরকার ও সংস্থাগুলোকে তাদের তহবিলের বহুমুখীকরণে অনুপ্রাণিত করেছে।

ইসলামিক অর্থনীতিকে প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার অধিক স্থিতিশীল বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং গ্লোবাল বন্ডের আবর্তন এবং অংশীদারিত্ব বাজার ব্যবস্থার কারণে এর আবেদন ঋণগ্রহীতার কাছে এখনো রয়েছে।

উপরন্তু, সম্পদ শ্রেণিরা তাদের অর্থ পরিচালনার জন্য বিনিয়োগকারীদের গ্রহণের আরো নৈতিক পদ্ধতির ওপর তাদের মনোযোগ আকৃষ্ট করেছেন।

মালয়েশিয়ার ক্রেডিট রেটিং এজেন্সির ইসলামিক ফাইন্যান্সের প্রধান রুশ্লিনা রামলি বলেন, ‘মানসমূহের সমতুল্যতা এবং বণ্টন নীতির কারণে টেকসই এবং দায়িত্বশীল বিনিয়োগের জন্য বর্ধিত এই চাহিদাও ইসলামিক ফাইন্যান্সের প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।’ আরটিএনএন

captcha