IQNA

কুরআনের সূরাসমূহ/১৯

সূরা মারইয়াম; একজন সতী মায়ের গল্প

5:31 - July 22, 2022
সংবাদ: 3472158
তেহরান (ইকনা): পবিত্র কুরআনে হযরত ঈসা (আ.)-এর মা হযরত মারইয়াম’কে (আ.) একজন সতী নারীর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে; তিনি নবী ছিলেন না, তবে তিনি একজন নবীর মতো উত্থাপিত হয়েছেন এবং একজন নবীর মতো আচরণ করেছেন।
পবিত্র কুরআনের ১৯তম সূরার নাম "মারইয়াম"। এই সূরায় ৯৮টি আয়াত রয়েছে এবং এটি ১৬তম পারায় রয়েছে।এই সূরাটি মাক্কী সূরা। নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরটি ৪৪তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
এই সূরার ১৬ থেকে ২৭ এবং ৩৪ নম্বর আয়াতে হযরত মারইয়ামের জীবনের কাহিনী নিয়ে আলোচনা করার ফলেই এই সূরাটিকে "মারইয়াম" নামে নামকরণ করা হয়েছে।
সূরা মারইয়ামের দুটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে: প্রথমত, মহান নবীদের কাহিনী এবং মারইয়ামের গল্প বলার সময় তিনি «اُذْکُر»  “উজকুর” শব্দটি ব্যবহার করেছেন যার অর্থ স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং স্মরণ করার আদেশ। দ্বিতীয়ত, «رحمان» “রহমান” শব্দটি এই সূরায় ১৬ বার ব্যবহার করা হয়েছে সমস্ত ঘটনা এবং প্রাণীর প্রতি, বিশেষ করে নবী এবং বিশ্বাসীদের প্রতি মহান আল্লাহর ব্যাপক করুণা ও ভালবাসা প্রদর্শন করার জন্য।
তাফসির আল-মিজানে আল্লামা তাবাতাবায়ী এই সূরার মূল বার্তাটিকে সুসংবাদ এবং একটি সতর্কবাণী হিসাবে বিবেচনা করেছেন, যা নবীদের গল্পের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে।
এছাড়াও, এই সূরাটি মানুষকে তিনটি দলে বিভক্ত করেছে: প্রথম দলটি মহান আল্লাহর নেয়ামতের অধীন। এই দলের মধ্যে রয়েছে নবীগণ, মনোনীত ব্যক্তিরা এবং পথপ্রদর্শকগণ। তওবাকারী ও বিশ্বাসী এবং উত্তম কর্ম সম্পাদনকারী দ্বিতীয় দলে মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তৃতীয় দল পথভ্রষ্ট মানুষ ও শয়তানের সঙ্গী। 
উক্ত সূরায় হযরত জাকারিয়া (আ.), হযরত মারইয়াম (আ.), হযরত ঈসা (আ.), হযরত ইয়াহিয়া (আ.), হযরত ইব্রাহিম (আ.) এবং তার পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.), হযরত ইদ্রিস (আ.) এবং অন্যান্য কিছু ঐশ্বরিক নবীর ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
সূরা মারইয়ামের প্রথম অংশে হযরত জাকারিয়ার (আ.) কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে, যা লুকের গসপেলের খ্রিস্টান বর্ণনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। 
এই সূরায় মারইয়াম (আ.)এর গর্ভাবস্থা এবং ঈসা (আ.) এর জন্ম এবং দোলনায় তাঁর কথা বলার বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে এবং ঐশী নবী হিসাবে তাদের সততাও আন্তরিকতার প্রশংসা করা হয়েছে।
হযরত ঈসার (আ.) মা মারইয়াম (আ.) মুসলমানদের মধ্যে একজন বিখ্যাত এবং সম্মানিত নারী। আল্লাহ মারইয়ামকে (আ.) পুতপবিত্র করেছেন এবং বিশ্বের সমস্ত নারীদের মধ্য থেকে তাকে বেছে নিয়েছেন। হযরত ঈসা (আ.) দোলনায় মারইয়াম (আ.)-এর সততা ও পবিত্রতা নিশ্চিত করেছেন:
قَالَ إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ آتَانِيَ الْكِتَابَ وَجَعَلَنِي نَبِيًّا؛ وَجَعَلَنِي مُبَارَكًا أَيْنَ مَا كُنْتُ وَأَوْصَانِي بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ مَا دُمْتُ حَيًّا؛ وَبَرًّا بِوَالِدَتِي وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا شَقِيًّا؛ وَالسَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدْتُ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا
সে (শিশু) বলল, ‘নিশ্চয় আমি আল্লাহর বান্দা, তিনি আমাকে গ্রন্থ দান করেছেন এবং আমাকে নবী করেছেন। * আর আমি যেখানেই থাকি না কেন, তিনি আমাকে কল্যাণময় করেছেন। এবং যতদিন জীবিত থাকি আমাকে নামায আদায় করতে ও যাকাত প্রদান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। 
* এবং আমাকে আমার মায়ের প্রতি সদাচারী করেছেন, আর আমাকে উদ্ধত ও হতভাগ্য করেননি। * এবং শান্তি আমার প্রতি যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি ও যেদিন আমি মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হব।’ 
সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৩০ থেকে ৩৩। 
 
সংশ্লিষ্ট খবর
captcha