IQNA

হুজ্জাতুল ইসলাম ইয়াহইয়া আসগারির ব্যাখ্যা:

ইমাম সাজ্জাদ (আ.)এর দোয়া ও অন্তর্দৃষ্টি বৃদ্ধির মাধ্যমে আশুরার আন্দোলনের জীবিত রক্ষাকারী

10:48 - July 09, 2025
সংবাদ: 3477675
ইকনা- একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বলেন: ইমাম সাজ্জাদ (আ.) আশুরার আন্দোলনকে দোয়া ও অন্তর্দৃষ্টি বৃদ্ধির রূপে জীবিত রেখেছেন। তিনি দোয়াকে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন ধর্মীয়, বিশ্বাসগত, নৈতিক এমনকি রাজনৈতিক বিষয় ব্যাখ্যার জন্য। তিনি দোয়ার মাধ্যমে এমনভাবে ধর্মীয় মর্মার্থ ব্যক্ত করতেন যাতে তা মানুষের হৃদয়ে প্রভাব ফেলে এবং একই সাথে সচেতনতা সৃষ্টি করে।

আশুরার ঘটনার পর ইমাম সাজ্জাদ (আ.) শিয়াদের চলার পথ অব্যাহত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর সংগ্রামের ধরণ পূর্ববর্তী ইমামদের থেকে কিছুটা ভিন্ন ছিল। আপনি কি এই পরিবর্তন ও ইমামের সংগ্রামের ধরণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেবেন?
হুজ্জাতুল ইসলাম আসগারি: ইমাম সাজ্জাদ (আ.)-এর ইমামতি প্রায় ৩৫ বছর স্থায়ী ছিল। এই সময়ে তিনি আশুরার বিদ্রোহ ও বার্তা সংরক্ষণের কৌশল গ্রহণ করেন এবং উমাইয়া শাসকদের মুনাফিকতাপূর্ণ প্রচারের বিরুদ্ধে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বার্তাকে জীবিত রাখার চেষ্টা করেন। উমাইয়ারা ইমাম হুসাইন (আ.)-কে ধর্মত্যাগী হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিল এবং তাঁর শাহাদাতকে একটি অনিবার্য পরিণতি হিসেবে উপস্থাপন করতো। এর বিপরীতে, ইমাম সাজ্জাদ (আ.) কুফা, শাম ও মদিনায় শক্তিশালী ভাষণে এই ষড়যন্ত্রের মুখোশ খুলে দেন।
তাঁর কিছু কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
• কারবালার শহীদদের জন্য ক্রন্দন,
• সাইয়্যেদুশ শুহাদা (আ.)-এর মাটিতে সিজদাহ করা,
• ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জিয়ারতের ওপর জোর দেয়া,
• পানি পান করার সময় শহীদদের স্মরণ করা,
• পিতার আংটি পরা।
এই সবই ছিল সমাজে জিহাদ ও শাহাদাতের চেতনা জীবিত রাখার কৌশল।
আশুরার পর তিনি তাঁর সম্মানিত ফুফু হযরত জয়নব (সা.)-এর সাথে মিলে ইবনে জিয়াদ ও ইয়াজিদের দরবারে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সত্যপথের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ান। ইমামের এই অবস্থান এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে ইয়াজিদকে তার দোষ ইবনে জিয়াদ ও অন্যদের ঘাড়ে চাপাতে বাধ্য করে নিজেকে দোষমুক্ত প্রমাণ করতে।
 
আশুরার পর ইমাম সাজ্জাদ (আ.) অস্ত্রবিহীন সংগ্রাম শুরু করেন এবং দোয়া ছিল তাঁর প্রধান হাতিয়ার। ইমামের দোয়ার সমাজ ও রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়ে?
হুজ্জাতুল ইসলাম আসগারি: ইমাম সাজ্জাদ (আ.) দোয়াকে ব্যবহার করেছেন বিশ্বাস, ধর্মীয় জ্ঞান, নৈতিকতা ও রাজনীতির দিক থেকে মানুষের শিক্ষার একটি মাধ্যম হিসেবে। যেমন, তাঁর “সীমান্ত রক্ষাকারীদের জন্য দোয়া” একটি গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক বার্তা বহন করে। এই দোয়া ও অন্যান্য সাহিফায় তিনি এমনভাবে শিক্ষামূলক বক্তব্য দিয়েছেন যা হৃদয়ে প্রবেশ করে এবং চিন্তা জাগিয়ে তোলে।
তাঁর "রিসালায়ে হুকুক" (অধিকার পত্র) একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিকহ ও নৈতিক নথি, যেখানে মানুষের একে অপরের প্রতি অধিকার বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই দোয়া ও শিক্ষা ছিল উমাইয়া খিলাফতের দারা প্রবর্তিত বিভ্রান্তি ও বিদআতের বিরুদ্ধে এক প্রজ্ঞাপূর্ণ প্রতিরোধ।
 
captcha