ইকনা-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার বিকেলে হোটেল পারসিয়ান আজাদিতে এই আন্তর্জাতিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ইরানের নারী ও পরিবার বিষয়ক সহ-প্রেসিডেন্ট জাহরা বেহরোজ আজার, নারী ও পরিবার উচ্চ পরিষদের প্রধান ফাহিমা ফারহামানদপুর এবং সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিদেশি নারী অতিথিরা।
বিবৃতির মূল বক্তব্যে বলা হয়:
প্রায় দুই বছর ধরে ইসরায়েলি দখলদাররা ইসলামী ভূখণ্ডে নৃশংস আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তাদের অপরাধ আরও বিস্তৃত করছে। গত বছর মুসলিম নারীদের এ ধরনের বৈঠকে আলোচনায় উঠে এসেছিল যে, ইসরায়েলি আগ্রাসন মূলত গাজা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী অংশের নীরবতা ও উদাসীনতায় সাহস পেয়ে এখন তারা আগ্রাসন বিস্তার করেছে পশ্চিম তীর, লেবাননের দাহিয়া, ইয়েমেনের সানআ, এমনকি ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্যান্য শহরে।
বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, দখলদাররা মূলত সেই দেশ ও জনগণকে টার্গেট করছে, যারা ইতিহাসের সঠিক পাশে দাঁড়িয়ে মজলুমদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে হযরত আলী (আ.)-এর বাণী উল্লেখ করা হয়: “জুলুমের প্রতিবাদ এবং মজলুমের পাশে সহযোগী হও।”
অংশগ্রহণকারী নারীরা ইরানি নারীদের দৃঢ়তা ও ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তারা সাম্প্রতিক ১২ দিনের আরোপিত যুদ্ধেও ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে নতুন এক আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
যৌথ বিবৃতিতে ৫ দফা আহ্বান জানানো হয়:
১. জালেমদের প্রতি নীরব থাকা কোনো দেশের জন্য নিরাপত্তা বয়ে আনবে না; বরং তা তাদের অবৈধ স্বার্থের অনুগত দাসে পরিণত করবে।
২. গাজার মানুষের ভাগ্য মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য জাতির ভাগ্য থেকে আলাদা নয়; আজ যদি গাজায় নৃশংসতা উপেক্ষা করা হয়, অচিরেই তা সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
৩. গাজার মানুষের কাছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য পৌঁছে দেওয়া, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য, মুসলিম দেশগুলোর প্রধানতম দাবি এবং সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
৪. অবৈধ ইসরায়েলি শাসনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে এবং সব ধরনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
৫. বিশ্বের মুসলিম ও অমুসলিম জনগণ, বিশেষ করে সুশীল সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং নারী অধিকারকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয় যারা দায়িত্বশীলভাবে গাজার নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং হাজারো মানুষের বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদ বিশ্ববাসীর কানে পৌঁছে দিয়েছেন। 4304132#