
আমেরিকার সিটি মেয়র নির্বাচনে নিউইয়র্কে "ডোনাল্ড ট্রাম্প" সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নতুন এবং তরুণ মেয়রপ্রার্থী "জোহরান মামদানি'র জয়ের কথা উল্লেখ করে মার্কিন মিডিয়া জোর দিয়ে বলেছে: ট্রাম্পের এই পরাজয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বার্তা সংস্থা ইরনা'র বরাত দিয়ে পার্সটুডে আরও জানায়, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জাহরান মামদানী ট্রাম্প সমর্থিত একজন দুর্বল রিপাবলিকান প্রতিপক্ষকে পরাজিত করতে এবং নিউইয়র্কের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হতে সক্ষম হয়েছেন।
আমেরিকাসহ বিশ্ব মিডিয়া এই জয়কে কেবল স্থানীয় ফলাফল হিসাবে নয় বরং মার্কিন রাজনীতিতে বৃহত্তর উন্নয়নের লক্ষণ হিসাবেও ব্যাখ্যা করেছে। মামদানির বিনামূল্যে বাস, ভাড়া হ্রাস, সিটি শপিং সেন্টারসহ ধনীদের ওপর উচ্চ করের প্রতিশ্রুতি আমেরিকার মিডিয়াতে "নিউ ইয়র্কে বাম দিকে লাফানো" হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। তাদের বিশ্বাস মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের জীবনযাত্রার দুরবস্থা মামদানিকে নির্বাচনে জয় এনে দিয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট একটি নিবন্ধে মামদানির নির্বাচনের আরেকটি দিক তুলে ধরে লিখেছে মামদানি আমেরিকার মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি "ঐতিহাসিক মুহূর্ত", কারণ অভিবাসীদের মধ্য থেকে একজন নাগরিক মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
ফরাসি সংবাদপত্র লা মন্ড মামদানির বিজয়কে আমেরিকার বৃহত্তম শহরের জন্য একটি রাজনৈতিক বিপ্লব বলে অভিহিত করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে: "মামদানির বিজয় নিউইয়র্কে দশ বছরের ন্যায়বিচার-ভিত্তিক নীতির দিকে ধীরে ধীরে আন্দোলনের ফলাফল। তিনি বৈষম্যের ক্লান্ত প্রজন্মের জন্য আশার প্রতীক।" তবে, সংবাদপত্রটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আমলাতান্ত্রিক বাধা এবং অর্থনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর চাপ মামদানির দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করা কঠিন করে তুলতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানও ওই নির্বাচনে জয়ের পর মামদানির দেওয়া ভাষণের কথা উল্লেখ করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, বক্তৃতায় তিনি ট্রাম্পকে "তোমার ভলিয়্যুম বাড়িয়ে দাও" বলে সরাসরি সম্বোধন করেছিলেন, ওই বক্তৃতা কেবল নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন নয় বরং বিরোধী ধারণার জন্য একটি যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবেও বিবেচ্য।
এবিসি নিউজও বিশ্লেষণ করেছে, এই ফলাফল ট্রাম্প এবং রিপাবলিকানদের জন্য তাদের সাম্প্রতিক নীতির ব্যর্থতার একটি সংকেত।
দক্ষিণ এশীয় শেকড়ের কারণে ভারতীয় মিডিয়াও মামদানির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে, এমনকি ভারতেও তার নির্বাচনের পর "নিউইয়র্ক থেকে কোটিপতিদের প্রস্থান" নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। মামদানি উগান্ডার মা এবং ভারতীয় বাবার সন্তান, দুজনেই ১৯৮০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়েছিলেন।# পার্সটুডে