
আলকম্পাস ওয়েবসাইট জানায়, গথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে যে অনেক মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহরের পরিবর্তে উপকণ্ঠের স্কুলে পড়াশোনা করাকে নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য বিকল্প হিসেবে দেখছে।
গবেষণাটি পরিচালনা করেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক ক্রিস্টোফার আলি তুরিন, যিনি নিজেও মুসলিম। তিনি সুইডিশ টেলিভিশন SVT-কে বলেন, এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতাগুলোকে সামনে আনা, কারণ স্কুল নির্বাচনের বিষয়ে পূর্ববর্তী গবেষণাগুলো ধর্মকে প্রায় কখনোই প্রভাবক হিসেবে গুরুত্ব দেয়নি — একটি প্রবণতা যা তার মতে এখন পরিবর্তন হওয়া উচিত।
গবেষণায় চারটি শিক্ষাবর্ষ ধরে গথেনবার্গ শহরতলির এক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, ধর্মীয়ভাবে অনুগত শিক্ষার্থীরা উপকণ্ঠের স্কুলগুলোতে নিজেদের বেশি স্বাগত ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, যেখানে শিক্ষক ও সহপাঠীদের আচরণ তুলনামূলকভাবে সহনশীল।
তুরিন বলেন, যেসব শিক্ষার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, তাদের অধিকাংশই জানিয়েছেন যে তারা শহরের কেন্দ্রীয় স্কুলগুলোতে বৈষম্য, বিদ্বেষ ও ইসলামবিরোধী মন্তব্যের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি মনে করেন।
তিনি মনে করেন, মুসলিম শিক্ষার্থীদের প্রতি গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। যেমন— নামাজের জন্য নিরিবিলি জায়গা নির্ধারণ করা বা ইসলামী ধর্মীয় ছুটিগুলোর প্রতি সম্মান দেখানো, যা স্কুলগুলোকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশে পরিণত করতে পারে।
যদিও সুইডেনের শিক্ষা আইন অনুসারে শিক্ষা ব্যবস্থা ধর্মনিরপেক্ষ (secular) হওয়া উচিত, তবু তুরিনের মতে এর অর্থ এই নয় যে ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তিনি বলেন, “স্কুলগুলো ক্রিসমাস বা ইস্টারের মতো খ্রিস্টীয় উৎসব পালন করে এবং অনেক সময় মুসলিম শিক্ষার্থীদেরও তাতে অংশ নিতে বলা হয়। আমি এসব অনুষ্ঠান বন্ধ করার আহ্বান দিচ্ছি না, বরং এমন কার্যক্রম যোগ করার কথা বলছি যা পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধাবোধ বাড়ায়।”
বর্তমানে স্কুলে নামাজের অনুমতি বা ধর্মীয় চর্চা করার সিদ্ধান্ত প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ওপর নির্ভর করে, যা তুরিনের মতে একটি বড় সমস্যা সৃষ্টি করছে।
তিনি গথেনবার্গ পৌরসভাকে আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়— বিশেষ করে রোজা ও নামাজের বিষয়ে— যাতে বর্তমান অস্পষ্টতা থেকে সৃষ্ট অপ্রয়োজনীয় বিরোধ ও বিভ্রান্তি দূর হয়।4315202#