IQNA

কুরআন কি বলে/১২

কুরআনের দৃষ্টিকোণ থেকে সৎকর্মশীলতার পরিপূর্ণতা

7:34 - June 27, 2022
সংবাদ: 3472053
তেহরান (ইকনা): পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতে সৎকর্মশীলতার মাপকাঠির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা মুসলমানদের আচরণগত এবং বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তার প্রতি কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে একটি ভাল ধারণা তৈরি করে।

সূরা বাকারার ১৭৭ নম্বর আয়াতটি নেক ও গুণী ব্যক্তিদের বর্ণনায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এই আয়াতে নেকীর প্রধান মানদণ্ডের একটি সম্পূর্ণ তালিকা তুলে ধরা হয়েছে।আয়াতে বলা হয়েছে: আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা ও আসমানী গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস করো, সেইসাথে দান, নামাজ, যাকাত প্রদান, অঙ্গীকার পূর্ণ করো এবং তাকওয়া পালন করো। হযরত মুহাম্মদ (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি এই আয়াতের উপর আমল করবে, তার ঈমান পরিপূর্ণ হবে।
 
۞ لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا ۖ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ ۗ أُولَٰئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ
 
পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে কোন পুণ্য নেই; বরং পুণ্য তো তারই জন্য যে আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাকুল, (আল্লাহর) গ্রন্থসমূহ এবং নবীগণকে বিশ্বাস করে: এবং আল্লাহর প্রেমে আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম, দরিদ্র (ও নিঃস্ব), অসহায় পথিক, ভিক্ষুক এবং দাস-দাসীদের (মুক্তির) জন্য সম্পদ ব্যয় করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে (যথাযথ ও নিয়মিতভাবে নামায আদায় করে), যাকাত প্রদান করে এবং যে প্রতিশ্রুতি প্রদান করে তা পালনও করে; এবং অভাব-অনটনে, দুঃখ-দুর্দশায় (শারীরিক) ও সংকটকালে (যুদ্ধের সময়) ধৈর্যধারণ করে তারাই (তাদের বিশ্বাসের দাবিতে) সত্যবাদী এবং তারাই প্রকৃত সাবধানী (ও আত্মসংযমী)।
সূরা বাকারা, আয়াত: ১৭৭।
 
এই আয়াতের প্রথম অংশ সম্পর্কে শাইখ তাবারসী নামে প্রসিদ্ধ আমিরুল ইসলাম আবু আলী ফাজল বিন হাসান তাবারসী বলেন: যখন মুসলমানদের কিবলা বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে কাবায় স্থানান্তরিত হয়, তখন মুসলিম, ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে অনেক বিরোধ দেখা দেয়। ইহুদীরা মনে করত হাত পশ্চিম দিকে তুলে প্রার্থনা করা উত্তম, আর খ্রিস্টানরা মনে করত পূর্ব দিকে প্রার্থনা করা উত্তম। মহান আল্লাহ এই আয়াতটি নাজিল করেছেন এবং এই বিবাদকে অবমূল্যায়ন করার মাধ্যমে তিনি মূল বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। মূল বিষয়টি হল: “কল্যাণ ও পরোপকার”।
 
ঈমানের পরিপূর্ণতা
আল্লামা তাবাতাবায়ী বিশ্বাস করেন যে, এই আয়াতটি শুধুমাত্র নবীদের জন্য নয় এবং বিশ্বাস করেন যে যদিও এই আয়াতে যা বলা হয়েছে তা অনুশীলন করা অনেক কঠিন, কিন্তু নবীরা ছাড়াও এতে “মাসুমীন“ এবং “উলাল আল-আলবাব”  অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। উলাল আল-আলবাব অর্থ বুদ্ধি, চিন্তা, উপলব্ধি ও অন্তদৃষ্টিশক্তির অধিকারী, যারা অজ্ঞ, জাহেল  ও অন্ধ হৃদয়ের  বিরুদ্ধে সত্যকে গ্রহণ করেছেন।
 
সংশ্লিষ্ট খবর
captcha