IQNA

ওয়াশিংটন কেন ব্রিকসকে ভয় পায়?

16:14 - July 09, 2025
সংবাদ: 3477676
ইকনা- দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশগুলোর ফোরাম ব্রিকসের ক্রমবর্ধমান প্রসার এবং গ্লোবাল সাউথ বা বৈশ্বিক দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে এর প্রভাব বিস্তারের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারও জোটটিকে হুমকি দিয়েছে। আমেরিকা বলেছে, তারা এটিকে কেবল একটি অর্থনৈতিক জোট হিসেবে দেখছে না বরং এটিকে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসেবে গণ্য করছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ট্রাম্পের দৃষ্টিতে ব্রিকস জোট ওয়াশিংটনের স্বার্থকে ক্ষুণ্ণ করতে চাইছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এর জনগণকে অপব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি পোস্টে এই বিষয়ে বলেছেন, "যেসব দেশ ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর আমেরিকা-বিরোধী নীতির সাথে নিজেকে জড়াবে তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই নীতির কোনও ব্যত্যয় ঘটবে না। এই বিষয়ে মনোযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!"
 
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বিবৃতি আসলে নতুন বহু-মেরু কেন্দ্রিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠার বিষয়ে ওয়াশিংটনের গভীর উদ্বেগের ইঙ্গিত দেয়। নতুন ব্যবস্থা পশ্চিমা শক্তি বিশেষকরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিয়ম মেনে চলবে না এবং এই ব্যবস্থা কিছু দেশের আধিপত্য ক্ষুণ্ণ করে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে চায়।
 
কিন্তু এই ব্যবস্থা নিয়ে আমেরিকা কেন চিন্তিত? বছরের পর বছর ধরে মার্কিন আর্থিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার আধিপত্য ছিল গোটা বিশ্ব ব্যবস্থায় এবং বেশিরভাগ দেশকেই ওয়াশিংটনের নির্ধারিত কাঠামোর মধ্যে চলতে বাধ্য করা হতো। এই প্রেক্ষাপটে ব্রিক্সের  মতো প্রতিষ্ঠানের উত্থান যা মার্কিন আধিপত্য থেকে দেশগুলোকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার কথা বলছে তাতে স্বাভাবিকভাবেই আধিপত্যকামী মার্কিন সরকার ব্যবস্থা সন্তুষ্ট হতে পারে না। এতে স্বাভাবিক ভাবেই আমেরিকার শাসন যন্ত্র ভয় পাচ্ছে, তাদের আধিপত্য ক্ষুণ্ণ হলে এর পরিণতি কী হতে পারে তা নিয়েও তাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।
 
এই ব্রিক্স প্রথমে কেবল ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত হয়েছিল, কিন্তু এখন এটি একটি প্রভাবশালী ও বিস্তৃত ভূ-রাজনৈতিক ব্লকে পরিণত হয়েছে। ডলারের আধিপত্য মোকাবেলা, জাতিসংঘের কাঠামো সংস্কারের চেষ্টা, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) এর মতো স্বাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার ওপর মনোনিবেশের মতো বিষয়গুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্বব্যাংকের মতো পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রচেষ্টা মার্কিন তথা পশ্চিমা আধিপত্যকামীদের জন্য বড় বিপদ সংকেত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
 
এছাড়া, ডলারের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে এই প্রতিষ্ঠান। ডলারের এই আধিপত্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বে তার ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে এসেছে। আমেরিকা এই অবস্থানকে অপব্যবহার করে অন্য দেশকে সুইফট  ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া এবং অন্যের সম্পদ কুক্ষিগত করার মতো অন্যায় পদক্ষেপ নিতে পেরেছে।
 
এই কারণে বিভিন্ন দেশ এর বিকল্প সম্পর্কে চিন্তাভাবনা এবং স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এছাড়াও, আমেরিকার বিশাল ঋণের বোঝার কারণে বিভিন্ন দেশ ডলারের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। পার্সটুডে#
captcha