IQNA

কুরআন ও ইমাম হুসাইন (আ.) – ৩

ইমাম হুসাইন (আ.)-এর রাজআতের প্রভাব ও ফলাফল

21:09 - July 08, 2025
সংবাদ: 3477671
ইকনা- ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর বিশ্বস্ত সাথীদের নিয়ে ফিরে আসবেন—এই চিন্তাধারা তথা রাজআতের বিশ্বাস, ঈমানি ও নৈতিক দিক থেকে বহু সুফল বয়ে আনে।

ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর বিশ্বস্ত সাথীদের নিয়ে ফিরে আসবেন—এই চিন্তাধারা তথা রাজআতের বিশ্বাস, ঈমানি ও নৈতিক দিক থেকে বহু সুফল বয়ে আনে।
কুরআনের ব্যাখ্যায় রাজআতের (পুনরাগমন) ইঙ্গিত:
সূরা ইসরা’র ৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:
«ثُمَّ رَدَدْنا لَکُمُ الْکَرَّةَ عَلَیْهِمْ»
অর্থাৎ: “এরপর আমরা তোমাদেরকে আবার তাদের (শত্রুদের) উপর বিজয়ী করব।”
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন: ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর ৭০ জন বিশ্বস্ত সাথীকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় ফিরে আসবেন। তাঁদের মাথায় থাকবে সোনার হেলমেট। তাঁরা দু’দিক থেকে এগিয়ে এসে মানুষকে জানিয়ে দেবেন—এই ব্যক্তি হচ্ছেন ইমাম হুসাইন (আ.) যিনি ফিরে এসেছেন।
এই ঘোষণা এমনভাবে দেওয়া হবে যেন কোনো মুমিন তাঁর বিষয়ে সংশয়ে না পড়ে এবং কেউ ভাববে না যে তিনি দাজ্জাল বা শয়তান।
এ সময়ে ইমাম মাহদি (আ.) এখনো জীবিত ও মানুষের মধ্যে অবস্থান করবেন।
যখন মুমিনদের হৃদয়ে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মাবে যে তিনিই হুসাইন (আ.), তখন ইমাম মাহদি (আ.)-এর ইন্তেকালের সময় উপস্থিত হবে।
এই অবস্থায় ইমাম হুসাইন (আ.)-ই তাঁকে গোসল করাবেন, কাফন ও দাফনের আয়োজন করবেন, কারণ একজন ওসির দাফনের দায়িত্ব আরেক ওসির উপরই বর্তায়, এবং এই দায়িত্ব একজন ইমামের উপরই বর্তায়।
রেজআতের প্রধান সুফলসমূহ:
১. ইতিহাসে বিলীন না হওয়া:
রেজআতের প্রথম ফলাফল হলো—ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর সাথীরা কেবল ইতিহাসের পাতা বা অতীতে হারিয়ে যাওয়া কোনো ঘটনা নন। বরং তাঁদের কাফেলা এখনো জীবিত ও চলমান এবং ভবিষ্যতের কোনো এক সময়ে আবার প্রকাশ পাবে।
2. চেতনায় জীবিত উপস্থিতি:
দ্বিতীয় ফলাফল হলো—এই কাফেলা মৃত নয়, জীবন্ত। এবং প্রতিনিয়ত বিশ্বের পবিত্র অন্তরের অধিকারী মানুষদের নিজের দিকে আকর্ষণ করছে।
এমনকি আজও আমরা দেখতে পাই যে, বহু পবিত্র আত্মা ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রতি আকৃষ্ট হয়—মুহাররম ও আরবাঈনের তাযিয়া-মিছিলগুলো এই বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।
3. আশা, প্রস্তুতি ও আত্মশুদ্ধির প্রেরণা:
তৃতীয় ফলাফল হলো—এই রেজআতের চিন্তা ও বিশ্বাস আহলে বাইতের অনুসারীদের মনে আশা সৃষ্টি করে।
তাঁরা এই প্রত্যাশায় থাকে যে, কখনো না কখনো তাঁর (আ.) সেনাবাহিনীতে থাকার সৌভাগ্য অর্জন করবে।
এই আশাই মানুষকে নিজের চিন্তা-চেতনা ও আচরণ সংশোধনের দিকে নিয়ে যায়।
যতটা বিশ্বাস গভীর হয় যে ইমাম হুসাইন (আ.) একদিন ফিরে আসবেন, ততটাই মানুষ চেষ্টা করে শত্রুদের পথ থেকে দূরে থাকতে এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ অনুযায়ী জীবন গড়ে তুলতে। কারণ, সে চায় যেন রেজআতের সময় সেই মহৎ কাফেলার একজন সদস্য হতে পারে। 3493696
 
 
captcha