ইকনার প্রতিবেদনে রইটার্সের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দোহায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং "কাতারা" এলাকায় আকাশে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, শহরে টানা ১০টিরও বেশি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
আমেরিকান গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এসব বিস্ফোরণ হামাস নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও শিনবেত গোয়েন্দা সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে দাবি করেছে, "ইসরায়েলি বিমানবাহিনী অল্প আগে হামাসের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে।"
আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের এক শীর্ষ সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, দোহায় হামাসের আলোচক দলের বৈঠকের সময় তাদের ওপর এই হামলা চালানো হয়। সূত্রটি জানায়, ওই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।
ইসরাইলি চ্যানেল ১৫ জানিয়েছে, এই হামলা সামরিক ও রাজনৈতিক পর্যায়ের সর্বসম্মতিতে পরিচালিত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরাইলি চ্যানেল ১৪ রিপোর্ট করেছে, হামলার লক্ষ্য ছিলেন হামাসের নেতা খলিল আল-হাইয়া ও জাহের জাবারিন।
তবে আল-আরাবি নেটওয়ার্কের খবরে বলা হয়েছে, হামাসের আলোচক দল এই হত্যাচেষ্টা থেকে অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পেয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই "কাপুরুষোচিত হামলা"র তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি আবাসিক ভবন ও হামাস সদস্যদের বাসস্থানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। দোহা স্পষ্ট জানিয়েছে, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও সব ধরনের নীতি-নৈতিকতার প্রকাশ্য লঙ্ঘন এবং কাতারবাসী ও সেখানে বসবাসরত বিদেশিদের জন্য গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বকায়ী বলেন, "এই হামলা ইসরাইলি অপরাধের ধারাবাহিকতা। এটি একটি বিপজ্জনক ও অপরাধমূলক পদক্ষেপ, যা আন্তর্জাতিক আইন, কাতারের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ফিলিস্তিনি আলোচকদের ওপর হামলা।"
হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বাধীন হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব ইসরাইলি বিমান হামলা থেকে বেঁচে গেছেন।
দোহায় মার্কিন দূতাবাস নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত এবং সবাইকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।
ইরাক, কুয়েত, জর্ডান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দোহায় ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, "কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরাইলের এই হামলা কাতারের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রকাশ্য লঙ্ঘন।"
ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন এক বিবৃতিতে বলেছে, "দোহায় হামাস নেতাদের বৈঠককে লক্ষ্যবস্তু করা ইসরাইলি হামলা একটি পূর্ণাঙ্গ অপরাধমূলক পদক্ষেপ, যা মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক আন্তর্জাতিক আইনকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে।" 4304314#