এ কথা তিনি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার "১৫ শতাব্দী ধরে আলোর ও করুণা প্রদায়ী বার্তাবাহকের অনুসরণ" উপলক্ষে এক বক্তব্যে বলেন। এই ওয়েবিনারটি ইসলামের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জন্মের ১৫০০ বছর পূর্তির উৎসব হিসেবে আন্তর্জাতিক কুরআন বার্তা সংস্থা (IQNA)-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।
ওয়েবিনারের আলোচ্য বিষয়সমূহ ছিল: কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিশ্বনবীর বার্তা, নবীজির জীবনে সহনশীলতা ও সহমর্মিতার ভূমিকা, নবী মুহাম্মাদ (সা.)—সর্বকালের জন্য আদর্শ, সীরাতে নববী ও ইসলামী পরিচয়ের পুনর্নির্মাণ এবং ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর স্থায়িত্ব বনাম পাশ্চাত্য বিশ্বায়নের ধারণা।
ওয়েবিনারটিতে বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় ও শিক্ষাবিদরা অংশ নেন। উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন: হুজ্জাতুল ইসলাম সিদ হুসেইন খাদেমিয়ান (ইরান), আয়াতুল্লাহ শেখ মোহাম্মদ ইয়াকুবি (নজাফ), প্রফেসর জুয়ান কোল (মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র), দ.মিশরের আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আবদুসসালাম কাওয়ি এবং শেখ ইউসুফ গাজি হানিনাহ (লেবানন)।
শেখ ইউসুফ গাজি হানিনাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন: নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর আগমন ছিল বিশ্বজগতের জন্য করুণা ও আল্লাহর উপহার। কোরআনে উল্লেখ আছে: "وما أرسلناك إلا رحمة للعالمين" (আমরা আপনাকে সমগ্র জগতের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।)
তিনি বলেন, নবীজির মূল বার্তা ছিল মানুষকে একমাত্র আল্লাহর দাসে পরিণত করা, যাতে তারা অন্যের দাসত্ব থেকে মুক্তি পায় এবং কেবল আল্লাহর সামনে মাথানত করে।
তিনি আরও বলেন, “দুই ধরনের ধারণা আজকের পৃথিবীতে টিকে আছে — একটি ধারণা মানুষকে দাসে পরিণত করতে চায় (আমেরিকান-সিয়োনিস্ট-পশ্চিমা প্রকল্প), অন্যটি মানুষকে আল্লাহর প্রকৃত বান্দায় পরিণত করতে চায় — যেটি ইসলামের প্রকৃত উদ্দেশ্য।”
তিনি ইসলামী বিপ্লবের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন যে, ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর নেতৃত্বে এই ধারণাই বাস্তবায়িত হয়েছে যে, মানুষ স্বাধীন জন্ম নেয় এবং তাদের স্বাধীনতা হরণ করা অনুচিত।
তিনি উল্লেখ করেন: নবী মুহাম্মাদ (সা.) সকল মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে এসেছিলেন। “কখন তোমরা মানুষকে দাস বানালে, অথচ তাদের মায়েরা তো তাদের স্বাধীন জন্ম দিয়েছে? ”নবীজি দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে দিয়েছিলেন — তা হোক অর্থ-সম্পদ, নারী বা কামনার দাসত্ব। তিনি মানবজাতিকে আহ্বান করেছিলেন আত্মমর্যাদা, ন্যায়বিচার ও আল্লাহর পথে জীবন গড়ে তোলার জন্য।
শেষে তিনি বলেন: "আল্লাহর দাসত্বই প্রকৃত স্বাধীনতা। ইসলাম এমন একটি ধর্ম, যা সম্মান, মর্যাদা, অধিকার ও আল্লাহর সান্নিধ্যে মানুষকে পৌঁছে দেয়।"
তিনি দোয়া করে বলেন: "আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে ক্ষমা করেন ও তাঁর সন্তুষ্ট বান্দা হিসেবে কবুল করেন।"